দৈনিক উত্তোলন ন্যূনতম ৬ লাখ ব্যারেল কমানোর সম্ভাবনা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং এ বিষয়ে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে ৫-৬ মার্চ অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় বৈঠকে বসছে ওপেক-নন ওপেক দেশগুলো। এ বৈঠকে বাজার ভারসাম্য ফেরাতে নতুন করে জ্বালানিপণ্যটির সম্মিলিত ন্যূনতম উত্তোলন দৈনিক ছয় লাখ ব্যারেল কমিয়ে আনতে পারে সৌদি আরব, রাশিয়াসহ সংশ্লিষ্ট দেশগুলো। ওপেক-নন ওপেক বৈঠকের প্রাক্কালে প্রকাশিত এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। ভিয়েনা বৈঠকের এ উদ্যোগ আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দরপতনে কিছুটা হলেও লাগাম টানবে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
জ্বালানি তেলের বাজারে নতুন করে সংকটের সূচনা চীনে নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার মধ্য দিয়ে। এর ফলে দেশটিতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা এক ধাক্কায় অনেকটা কমে যায়। শ্লথ হয়ে আসে দেশটির অর্থনীতি। এ পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানিপণ্যটির দাম ব্যারেলপ্রতি ৫০ ডলারের কাছাকাছি নামিয়ে আনে। এখন প্রাণঘাতী এ ভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। জ্বালানি তেলের দরপতনের চ্যালেঞ্জ আরো বেড়েছে।
পরিস্থিতি উত্তরণে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে ওপেক-নন ওপেক দেশগুলোকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন বর্তমানের তুলনায় আরো কমিয়ে আনার প্রস্তাব দেয়া হয়। প্রাথমিকভাবে এ প্রস্তাবে জোটের বেশির ভাগ দেশ রাজি হলেও আপত্তি জানায় রাশিয়া। তবে দীর্ঘ আলোচনার পর ওপেক-নন ওপেক জোটের এবারের বৈঠকে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো সৌদি আরবের প্রস্তাবে ঐকমত্য জানাতে পারে।
ওপেকসংশ্লিষ্ট দুটি সূত্রের বরাতে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওপেক-নন ওপেক দেশগুলো ভিয়েনা বৈঠকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দৈনিক উত্তোলন ৬-১০ লাখ ব্যারেল কমিয়ে আনার ঘোষণা দিতে পারে। এরই মধ্যে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। এতে রাশিয়াও সম্মতি জানিয়েছে।
এদিকে নতুন ঘোষণার আগেই অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সম্মিলিত উত্তোলন কমিয়ে এনেছে ওপেক জোটের দেশগুলো। ভিয়েনা বৈঠক সামনে রেখে প্রকাশিত রয়টার্সের এক জরিপ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ওপেকভুক্ত দেশগুলো প্রতিদিন গড়ে ২ কোটি ৭৮ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন করেছে, যা আগের মাসের তুলনায় দৈনিক ৫ লাখ ১০ হাজার ব্যারেল কম। গত এক দশকের মধ্যে এটাই ওপেকভুক্ত দেশগুলোয় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সর্বনিম্ন উত্তোলন।
লিবিয়ার উত্তোলন খাতে বিদ্যমান অচলাবস্থা গত মাসে ওপেকের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন কমাতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। ১৮ জানুয়ারির পর থেকে দেশটির জ্বালানি তেল কূপে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণের জের ধরে প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ ৫৫ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন হয়েছে। আগের মাসে দেশটিতে প্রতিদিন গড়ে ৭ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন হয়েছিল।
রয়টার্সের জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সৌদি আরব নির্ধারিত কোটার তুলনায় কম জ্বালানি তেল উত্তোলন করেছে। উত্তোলন কমিয়েছে কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে ইরান ও ভেনিজুয়েলায় জ্বালানিপণ্যটির উত্তোলন স্থিতিশীল ছিল। তবে গত ফেব্রুয়ারিতে ইরাক ও নাইজেরিয়া অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন বাড়িয়েছে।