মোল্লাহাটে বাড়ির কাছে সরকারি সেবা পেয়ে এলাকাবাসী খুশি

0

আলী আকবর টুটুল, বাগেরহাট ॥ মুজিববর্ষ উপলক্ষে বাগেরহাটের মোল্লাহাটে ব্যতিক্রমধর্মী সমন্বিত মাঠ সেবাদান করেছে উপজেলা প্রশাসন। বাড়ির কাছে সর্বপ্রথম এমন সেবা পেয়ে খুশি হয়েছেন স্থানীয় গ্রহিতারা। শুধু মোল্লাহাট নয় দেশে এমন উদ্যোগ এই প্রথম নেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন মোল্লাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাফ্ফারা তাসনিম। রবিবার দিনব্যাপী উপজেলার গাংনি ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে ৩০টি স্টলে উপজেলা পর্যায়ের ৩৭টি দফতর স্থানীয়দের বিভিন্ন সেবাদান করে। জমির নামজারি, খাজনা প্রদান, ভূমি উন্নয়ন কর প্রদানসহ ভূমি সংক্রান্ত নানান সেবা, স্বাস্থ্য সেবা, প্রাণিসম্পদ সংক্রান্ত সেবা, ব্যাংকিং সেবা, স্থানীয় সরকার বিভাগের সেবাসহ উপজেলা প্রশাসনের সকল সেবা প্রদান করা হয় এই মাঠ থেকে। দিনব্যাপী অন্তত সাড়ে ৪ হাজার স্থানীয় মানুষ এখান থেকে বিভিন্ন সেবা গ্রহণ করেন।
সেবা গ্রহিতারা বলেন, উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা মাঠের মধ্যে ছোট টেবিল চেয়ারে বসে আমাদের কথা শুনেছেন। যে কাজের কথা বলেছি করে দিয়েছেন। আমরা কখনও চিন্তাও করিনি স্যাররা আমাদের কাছে এসে সেবা প্রদান করবেন। এই ধরনের সেবা পেয়ে আমরা খুশি হয়েছি। বিকেলে সমন্বিত মাঠ সেবার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ দুই শতাধিক মানুষের অভিযোগের গণশুনানী করেন।
সেবা নিতে আসা গাংনি এলাকার ইয়াকুব আলী বলেন, জমির নামজারি করতে এসছিলাম। সকালে কাগজপত্র সব জমা দিয়েছি। অল্প সময়ে সকল কাজ সম্পন্ন করে নামজারির কাগজ দিয়েছেন আমাকে। আমি খুব খুশি। রবিউল ইসলাম বলেন, জন্মনিবন্ধনে বয়স বেশি দেওয়া ছিল। এখানে এসে স্কুলের সার্টিফিকেট দেখালে বয়স ঠিক করে দিয়েছে। স্বাস্থ্য, কৃষি ও প্রাণিদের সেবা নিয়েছেন অনেকে। কৃষক রুহুল আমিন বলেন, কয়েকদিন ধরে গরুটা কিছু খাচ্ছিল না। এখানে নিয়ে আসলে স্যাররা
সারাদিনই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টলের সামনে উপচেপড়া ভিড় ছিল। ৫-৬ জন এমবিবিএস চিকিৎসক রোগী দেখেছেন এখানে। মোল্লাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাফ্ফারা তাসনিম বলেন, নানা হয়রানির কারণে কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছে না। একদিকে সময় নষ্ট, অন্যদিকে অর্থের অপচয় হচ্ছে মানুষদের। এর থেকে মুক্ত করতে এবং মানুষের দোর গোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে আমাদের এই আয়োজন। ভবিষ্যতেও এধরনের আয়োজন অব্যাহত থাকবে। মোল্লাহাট উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিনুল আলম ছানা বলেন, আগে মানুষ জানত না কোন দফতর থেকে কি ধরনের সেবা নেয়া যায়। আজ এই সমন্বিত মাঠ সেবার মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ এই প্রথম সকল দফতরের সেবা সম্পর্কে জানতে পারল। সেই সাথে তারা সেবা পেয়ে আনন্দিত। আমি সরকারের এ ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। সমন্বিত মাঠ সেবার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে অনিয়ম দুর্নীতি ও হয়রানি মুক্তভাবে মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই এ ধরনের আয়োজন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে জেলার সকল উপজেলায় এ ধরনের আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।