যশোরে হাইকোর্ট মোড় থেকে তারাগঞ্জ বাজার পর্যন্ত নিরাপত্তাহীন এক সড়ক

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর শহরতলীর হাইকোর্ট মোড় থেকে শেখহাটি ভায়া তারাগঞ্জ বাজার পর্যন্ত সড়কটি এখন চরম নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে। গ্রামের নিভৃত এলাকাজুড়ে এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন মাদকসেবী যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেলের বিচরণে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, সড়কটি এখন মাদকসেবীদের জন্য নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, হাইকোর্ট মোড় হতে শেখহাটি ভায়া তারাগঞ্জ বাজার পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার এ রাস্তাটি দিয়ে যশোর শহরে সহজে আসা-যাওয়া করা যায়। বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী নড়াইল জেলা ও বাঘারপাড়া উপজেলা সদরের ভায়না এলাকা থেকে যারা মোটরসাইকেলে চড়ে যশোর শহরে আসা-যাওয়া করেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোকই গ্রামের নিভৃত এ সড়ক ধরে যাতায়াত করে থাকেন। তবে এ সুযোগে সম্প্রতি সড়কে মোটরসাইকেল আরোহী অপরিচিত তরুণদের আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন সকাল-বিকেল এসব অপরিচিত তরুণরা বিভিন্ন মডেলের মোটরসাইকেল চালিয়ে সড়কের ধানডাঙ্গা ব্রিজের ওপর গিয়ে অবস্থান করছে। ব্রিজের দুই পার থেকেই আগত য্বুকরা জড়ো হয়ে বিভিন্ন নেশাজাত দ্রব্য সেবন করছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সড়কটি গ্রামের ভেতর দিয়ে হওয়ায় মাদকসেবীরা এখন এটি নিরাপদ হিসেবে মনে করছে। তারা প্রতিদিন সহজেই এ সড়ক দিয়ে পার্শ্ববর্তী নড়াইল জেলা ও আশপাশ এলাকায় ইয়াবা, ফেনসিডিল গাঁজাসহ বিভিন্ন নেশাদ্রব্য পাচার করছে। যশোর-নড়াইল সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি থাকায় তারা গ্রামের ভেতরের এ সড়কটি ব্যবহার করছে। শহরতলীর শেখহাটি এলাকায় মাদকের একটি ঘাঁটি রয়েছে বলেও খবর রয়েছে। সাইফুল গাজী নামে এক ভ্যানচালক বলেন, ’প্রতিদিন আমি এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করি। দুপুরের পর যশোর শহর ও নড়াইল থেকে অপরিচিত যুবকরা মোটরসাইকেল চালিয়ে সড়কের ধানডাঙ্গা ব্রিজের কাছে এসে জড়ো হয়। এসব যুবকরা যখন মোটরসাইকেল চালিয়ে আসে তাদের গতিবিধি দেখলে ভয় লাগে। সাধারণ মানুষ তখন ভয়ে রাস্তায় উঠতে চায় না। তিনি বলেন, যুবকরা ব্রিজের উপরে আবার কোনো কোনো সময় ব্রিজের নিচে মাঠের মধ্যে ছবি তোলার ভান করে জড়ো হয়। সেখানে গিয়ে তারা সুকৌশলে ফেনসিডিলসহ অন্যান্য নেশাদ্রব্য সেবন করে। এরপর সন্ধ্যা নামার আগেই তারা বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে গন্তব্যে চলে যায়। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, যশোরের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে যেসব মাদক পাচার হয়ে আসে তার সিংহভাগ পার্শ্ববর্তী নড়াইল জেলা হয়ে রাজধানীর দিকে পাঠানো হয়। এসব মাদক ও চোরাচালানের মাধ্যমে আগে যশোর-নড়াইল মহাসড়ক দিয়ে আনা নেয়া করা হতো। বিগত কয়েক বছর ধরে এ সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মাদককারবারী আটক হয়েছে। এ জন্য পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে গ্রামের এ সড়কটি বেছে নিয়েছে অপরাধীরা। বিশেষ করে উঠতি বয়সী মাদকসেবী যুবকদের বেপরোয়া তৎপরতা বেড়েছে। এ বিষয়ে যশোর সদর উপজেলার চাঁদপাড়া ফাঁড়ি ইনচার্জ শামীম আকতারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ’এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান’।