চরমপন্থি জুয়েল বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় আতঙ্কে সহযোগীরা

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর সদর উপজেলার হাশিমপুরে সাবেক চরমপন্থি হোসেন আলী হত্যাকান্ডে প্রধান অভিযুক্ত জুয়েল পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর তার সহযোগীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। গডফাদাররাও রয়েছে আতঙ্কে। তবে তার মৃত্যুর খবরে হাশিমপুরসহ আশপাশ এলাকার মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। এসব মানুষ তার চাঁদাবাজির কারণে অতিষ্ঠ ছিলেন। অপরদিকে হোসেন আলী ও জুয়েল দুজনের মৃত্যুতেই হাশিমপুরের সাধারণ মানুষ ‘খুশি’ বলে জানিয়েছেন পুলিশের একজন কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, হাশিমপুর মধ্যপাড়ার মৃত আমজাদ মোল্লা ওরফে আমজাদ কসাইয়ের ছেলে জুয়েল ছিলো গোটা উত্তরাঞ্চলের মূর্তিমান আতঙ্ক। প্রতিপক্ষকে হত্যা, বেশুমার চাঁদাবাজি ছাড়াও সে বড় ধরনের ইয়াবা ট্যাবলেটের ব্যবসায়ী ছিলো। শুধু জুয়েল নয়, ইতোপূর্বে বন্দুকযুদ্ধে নিহত তার খালু চরমপন্থি আমিরুল ইসলাম বুলির ছেলে মুন্নাও একই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকা-ের সাথে জড়িত। ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর সকালে হাশিমপুর বাজারে প্রকাশ্যে প্রতিপক্ষ সাবেক চরমপন্থি হোসেন আলীকে জুয়েল ও মুন্না গুলি করে হত্যার পর সাধারণ মানুষ আরো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। লোকজন প্রকাশ্যে জুয়েল ও মুন্নাকে নিয়ে কথা বলতে ভয় পেতেন। কিন্তু ২৯ জানুয়ারি দিবাগত রাতে কিলার জুয়েল ডিবি পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার খবরে তাদের দ্বারা অত্যাচারিত অনেকেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। হোসেন আলীকে খুনের পর পলাতক থাকা অবস্থায় কিলার জুয়েল মোবাইল ফোন করে এলাকার অনেকের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করেছে। তার মৃত্যুতে নীরবে চাঁদা দিতে বাধ্য হওয়া এসব মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
সূত্র জানায়, চরমপন্থি জুয়েল ছিলো যেন অপ্রতিরোধ্য। কিন্তু সেও পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তার সহযোগী অন্য চরমপন্থিদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকায় জুয়েল-মুন্না গংয়ের সাথে সখ্য থাকা লোকজনও রয়েছে আতঙ্কে। তবে বিশেষভাবে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে জুয়েল-মুন্না গংয়ের গডফাদাররা। একজন রাজনৈতিক নেতা এই চরমপন্থিদের প্রধান আশ্রয়দাতা হিসেবে সর্বত্র আলোচিত। পুলিশ প্রশাসন জুয়েল-মুন্না গংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাওয়ায় ওই রাজনৈতিক নেতা নিজের অবস্থান নিয়ে এখন চরম উদ্বিগ্ন বলে সূত্রটি জানিয়েছে। এদিকে পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, হাশিমপুরের হোসেন আলী ও জুয়েল দুজনের মৃত্যুতেই এলাকার সাধারণ মানুষ ‘খুশি’। কারণ, হোসেন আলী আত্মসমর্পণের পর বিশেষ আনসারে চাকরি করলেও মনে প্রাণে চরমপন্থি আদর্শ লালন করতো। প্রতিপক্ষ চরমপন্থি বুলি ও বাবলা বন্দুকযুদ্ধে নিহতের পেছনে তার হাত ছিলো বলে অনেকে মনে করেন। এছাড়া সে এলাকার অনেক ঝামেলার সাথে জড়িত ছিলো। এ জন্য প্রতিপক্ষের হাতে হোসেন আলী খুন হওয়ায় মনে মনে ‘খুশি’ হন সেখানকার মানুষ। সাধারণ লোকজন তাদের এই ‘খুশি’ হওয়ার বিষয়টি গোপনে পুলিশকে জানিয়েছে। একইভাবে জুয়েল বন্দুকযুদ্ধে নিহতের খবরে গোপনে পুলিশকে মোবাইল ফোন করে লোকজন তাদের ‘খুশি’ হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করেছেন।