বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে রুয়ান্ডার চা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ পূর্ব আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডা চা উৎপাদন ও রফতানির জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। প্রতি বছর ১ জুলাই থেকে দেশটিতে পানীয় পণ্যটির নতুন মৌসুম শুরু হয়। চলে পরের বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। চলতি ২০১৯-২০ মৌসুমের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) রুয়ান্ডা থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে চা রফতানি আগের মৌসুমের একই সময়ের তুলনায় ৪ শতাংশ বেড়ে সাড়ে ১২ হাজার টন ছাড়িয়ে গেছে। একই সময়ে পানীয় পণ্যটির রফতানি বাবদ দেশটির আয়ও বেড়েছে ৮ শতাংশ। রুয়ান্ডার ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (এনএইবি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর দ্য নিউ টাইমস।
রুয়ান্ডার সরকারি প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ মৌসুমের জুলাই-নভেম্বর সময়ে রুয়ান্ডা থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ১২ হাজার ৬১৭ টন চা রফতানি হয়েছে, যা আগের মৌসুমের একই সময়ের তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি। ২০১৮-১৯ মৌসুমের প্রথম পাঁচ মাসে দেশটি থেকে মোট ১২ হাজার ১৮০ টন চা রফতানি হয়েছিল। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে দেশটি থেকে পানীয় পণ্যটির রফতানি বেড়েছে ৪৩৭ টন।
রফতানি বৃদ্ধির পাশাপাশি একই সময়ে চা রফতানি থেকে রুয়ান্ডার আয়ও ৮ শতাংশ বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে এনএইবি। প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ মৌসুমের জুলাই-নভেম্বর সময়ে চা রফতানি করে দেশটি সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৩২০ কোটি রুয়ান্ডান ফ্রাংক (স্থানীয় মুদ্রা) বা ৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার আয় করেছে। আগের মৌসুমের একই সময়ে চা রফতানি করে দেশটি ৩ হাজার ৮০ কোটি রুয়ান্ডান ফ্রাংক বা ৩ কোটি ৩৫ লাখ ডলার আয় করেছিল। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে চা রফতানি থেকে দেশটির আয় বেড়েছে ৪৫ লাখ ডলার।
মৌসুমের প্রথম পাঁচ মাসে রুয়ান্ডা থেকে এশিয়া, আফ্রিকা, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের ৪৮ দেশে চা রফতানি হয়েছে। চা রফতানিতে প্রবৃদ্ধির পেছনে নতুন নতুন বাগানে পানীয় পণ্যটির আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধি, মৌসুমের শুরুতে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত, সময়মতো বাগানে সার প্রয়োগ, মৌসুমজুড়ে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনাসহ আরো কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছে এনএইবি।
মৌসুমের প্রথম পাঁচ মাসে রুয়ান্ডান চায়ের গড় দাম কেজিপ্রতি ৭ ডলার ছাড়িয়েছে। এ সময় কেনিয়ার মোম্বাসায় আন্তর্জাতিক নিলামে রুয়ান্ডার শীর্ষ চারটি চায়ের ব্র্যান্ড জায়গা করে নিয়েছে। গত অক্টোবরে মোম্বাসার আন্তর্জাতিক নিলামে রুয়ান্ডান নায়াবিহু টি ফ্যাক্টরির প্রতি কেজি চা রেকর্ড ৬ হাজার ৬২৪ দশমিক ৮৯ রুয়ান্ডান ফ্রাংক বা ৭ ডলার ২২ সেন্টে বিক্রি হয়েছে। দেশটির গিসোবু ব্র্যান্ডের চা বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৭ ডলার ১৬ সেন্টে। একইভাবে রুয়ান্ডার কিতাবি ও রুবায়া ব্র্যান্ডের চা কেজিপ্রতি যথাক্রমে ৭ ডলার ২০ সেন্ট ও ৭ ডলার ৬ সেন্টে বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছে এনএইবি।
রুয়ান্ডা টি ফারমার্স কো-অপারেটিভ ফেডারেশনের সমন্বয়ক শায়াকা হেলমেনজিলদে বলেন, চা পাতা উৎপাদনে চাঙ্গা ভাব রুয়ান্ডার চা রফতানি খাতে প্রবৃদ্ধি অর্জনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। বাড়তি উৎপাদন ও তুলনামূলক ভালো দাম খাতসংশ্লিষ্টদের অবস্থা পরিবর্তনে ভূমিকা রাখছে, যা দেশের অর্থনৈতিক বিকাশে সহায়ক। তবে বিশ্বব্যাপী রুয়ান্ডার চায়ের জনপ্রিয়তা আরো বাড়াতে ব্র্যান্ডিং করা জরুরি।
উল্লেখ্য, ২০১৯-২০ মৌসুমে আন্তর্জাতিক বাজারে চা রফতানি করে সব মিলিয়ে ৯ হাজার ৩০০ কোটি রুয়ান্ডান ফ্রাঙ্ক বা ১০ কোটি ২০ লাখ ডলার আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে আফ্রিকার দেশটি।