লাল বাঁধাকপিতে সাফল্য চৌগাছার চাষি বাতেনের

0

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাষিরা বরাবরই নতুন নতুন ফসল উৎপাদনে বেশ পারদর্শী। নতুন উদ্ভাবনে তারা কখনও সফল হন আবার কখনও ক্ষতিরও সম্মুখিন হন। তারপরও নতুন আবিস্কারে কৃষক কখনও হাল ছাড়েন না। চলতি শীত মৌসুমে ইছাপুর গ্রামের এক চাষি পরীক্ষামূলক লাল বাঁধাকপির চাষ করে বেশ সাফল্য পেয়েছেন বলে জানা গেছে। চৌগাছা পৌর এলাকার ইছাপুর গ্রামের আবু বকর আলীর ছেলে কৃষক বাতেন আলী ওরফে আকরাম হোসেন। প্রায় ২০ বছর যাবত তিনি ইছাপুর গ্রামে বসবাস করেন এবং কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার আগে বসবাস ছিল যশোর সদর উপজেলার আব্দুলপুর গ্রামে। কৃষক বাতেন আলী বছরের বার মাসই কোন না কোন সবজি চাষ করে থাকেন। তবে শীত মৌসুম এলে তিনি হরেক রকম সবজি চাষে ব্যাপক ব্যস্ত সময় পার করেন। চলতি শীত মৌসুমে তিনি শিম, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি চাষের পাশাপাশি নতুন দু টি কপির চাষ করেছেন। একটি হচ্ছে ব্রো কপি, অপরটি রেড কেবল। স্থানীয়রা এই রেড কেবল কপিকে লাল বাঁধা কপি হিসেবে চেনেন।
গতকাল সরেজমিন ইছাপুর মাঠে গিয়ে দেখা মেলে কৃষক বাতেন আলীর। তিনি কপি ক্ষেতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিনি জানান, জন্ম থেকেই কৃষি কাজের সাথে জড়িত। তাই কোন মাটিতে কী ধরনের ফসল বেশি ফলন হয় সেটি বেশ জানা। চৌগাছা এলাকার কৃষি জমিতে দীর্ঘদিন ধরে একই ধরনের ফসল উৎপাদন করায় কৃষক কাঙ্খিত ফলন পান না বলে তিনি মনে করেন। সে কারণে নতুন জাতের সবজি চাষ করতে তার ইচ্ছা হয়। তিনি যশোর সদর উপজেলার আব্দুলপুর গ্রাম থেকে ২শ পিস রেড বেকল কপির চারা সংগ্রহ করেন। পরীক্ষামূলক এই কপি দেশি কপির সাথে চাষ করেন এবং সাফল্যও পেয়ে যান। বাতেন আলী বলেন, দেশি বাঁধা কপির ন্যায় লাল বাঁধা কপির চাষ করতে হয়। এই চাষের জন্য নতুন কোন কিছুর প্রয়োজন নেই। দেশি বাঁধা কপির মতই চারা রোপন থেকে শুরু করে, জমি পরিচর্জা, সার ও কীটনাশক প্রয়োগ সবকিছুই করতে হয়। পার্থক্য হচ্ছে দেশি বাঁধা কপি আর লাল বাঁধা কপির বাজারদর বেশ পার্থক্য। তিনি ২শ লাল বাঁধা কপির চাষ করে তা বিক্রি প্রায় শেষ করেছেন। প্রতি পিস কপি বাজারে ২০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। এ অঞ্চলে রেড কেবল কপির চাষ কম হওয়ায় সাধারণ মানুষের কাছে এর পরিচিতি কম। যার কারণে স্থানীয়দের এই কপির প্রতি আগ্রহ কম। তবে দেশের অন্য সব জেলাতে লাল বাঁধা কপির ব্যাপক চাহিদা বলে তিনি জানান। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাইচ উদ্দিন জানান, চৌগাছার মাটি সব ধরনের সবজি চাষের জন্য উপযোগী। কৃষক নতুন নতুন চাষ করে সাফল্য পাচ্ছেন এটি নিঃসন্দেহে একটি ভাল দিক। উপজেলা কৃষি অফিস এ অঞ্চলের চাষিদের সব ধরনের চাষ পদ্ধতিতে আরও বেশি মনোযোগী করে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে।