যশোরে ফের বেড়েছে শীতের তীব্রতা

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে আবারও শীতের তীব্রতা বেড়েছে। ঘণ কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়ার কারণে অনেক বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। কনকনে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, ঘণ কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে দূরপাল্লার যানবাহন। এছাড়াও ‍কুয়াশার কারণে সময় মতো বিমান না আসায় ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। যশোর বিমান বাহিনীর মতিউর রহমান ঘাঁটি আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য মতে, গত শনিবার (৪ জানুয়ারি) বৃষ্টিপাতের পর থেকে যশোরে ফের কমতে শুরু করে তাপমাত্রা। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই সঙ্গে ঘণ কুয়াশা ও উত্তরের হিমেল হাওয়ার কারণে জেঁকে বসেছে কনকনে শীত। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দেখা মেলেনি সূর্যের। যে কারণে সকালে কাজে বেরিয়ে চরম ভোগান্তিতে পরেছে খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষ।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানাগেছে, গত দেড় সপ্তাহ আগে যশোরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়। যা চলে টানা ৫ দিন ধরে। এসময় যশোরে তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করে। তবে উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রির নিচে নেমে যায়। এরপর শৈত্যপ্রবাহ কেটে যাওয়ার পর যশোর অঞ্চলের তাপমাত্রার পারদ উপরে উঠতে থাকে। জানুয়ারি মাসের শুরুর দিকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এরপর তাপমাত্রা ১৫ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করতে থাকে। তবে সর্বশেষ গত ৩ ও ৪ জানুয়ারি এ অঞ্চলে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হওয়ার পরপরই আবার কমতে থাকে তাপমাত্রা। গত তিন দিনে যশোরে তাপমাত্রা কমে ৬ ডিগ্রিরও বেশি। আবহাওয়া অফিসের হিসেব মতে, গত ৪ জানুয়ারি যশোরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর ৫ জানুয়ারি ১৪ ডিগ্রি ও ৬ জানুয়ারি ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এর পরই গতকাল মঙ্গলবার যশোরে তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রার এ বিস্তর ফারাককে আবহাওয়াবিদরা অস্বাভাবিক হিসেবে দেখছে। তাদের মতে জলবায়ূর বিরূপ প্রভাবের কারণে যশোরসহ দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের আবহাওয়া এ চরমভাবাপন্ন অবস্থায় চলে যাচ্ছে।
যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাটির আবহাওয়া অফিসের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, আবহাওয়া পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে। আগামী দুই তিন দিন এ অঞ্চলের তাপমাত্রা কমতে থাকবে। এক পর্যায়ে এটি হালকা শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিতে পারে। এসময় জনজীবনে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে দ্রুত তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় এর বড় প্রভাব পড়ছে জনজীবনের ওপর। সকাল থেকে প্রায় দুপুর পর্যন্ত এ অঞ্চলে সূর্য দেখা যাচ্ছে খুব অল্প সময়ের জন্য। কুয়াশার পাশাপাশি তীব্র শীত অনুভূত হওয়ায় মানুষ নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বেরোচ্ছে না। শীতের পোশাক না থাকায় নি¤œ আয়ের মানুষের ভোগান্তির যেনো শেষ নেই। জেলার বিভিন্ন এলাকায় শীতার্তদের মাঝে গরম কাপড় বিতরণ করলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল। যশোর বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক মাসুদুল হক জানান, ইউএসবাংলা ও নভোএয়ারের যশোরে প্রথম ফ্লাইট ছিল সকাল সাড়ে ৭টায়। কিন্তু ঘণ কুয়াশার কারণে গতকাল বিমান দুটি আসে বেলা ১২টার পর। ফলে প্রায় চার ঘণ্টা যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হয়েছে। তিনি আরও জানান, ঘণ কুয়াশা হলে সকাল ও রাতের ফ্লাইটগুলো কিছুটা বিলম্বিত হয়।