যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চেলসি ম্যানিংকে নির্যাতনের অভিযোগ জাতিসংঘ র‌্যাপোর্টারের

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দেশটির সাবেক সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা চেলসি ম্যানিংকে নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন জাতিসংঘের এক শীর্ষ কর্মকর্তা। গত নভেম্বরে জাতিসংঘে পাঠানো এক চিঠিতে এমন অভিযোগ করেছেন সংস্থাটির নির্যাতন বিষয়ক বিশেষ র‌্যাপোর্টার নিলস মেলজার। চিঠিটি ৩১শে ডিসেম্বর প্রকাশ করা হয়েছে। মেলজার অভিযোগ করেন, সীমাহীনভাবে, সকল সাংবিধানিক শর্ত পূরণ করে নির্যাতন ও অন্যান্য নির্মম, অমানবিক বা অধঃপতিত শাস্তির সমান বলপ্রয়োগের বিভিন্ন কঠোর পদক্ষেপের শিকার হচ্ছেন ম্যানিং। প্রসঙ্গত, উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য না দেয়ায় ম্যানিংকে আটক করেছে মার্কিন প্রশাসন। এ খবর দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
খবরে বলা হয়, ম্যানিংয়ের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে মিলে মার্কিন সামরিক কম্পিউটার থেকে গোপন নথি ফাঁসের অভিযোগ রয়েছে। ওই নথিপত্রগুলো তৎকালীন সময়ে আন্তর্জাতিক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। প্রাথমিকভাবে ২০১১ সালে ম্যানিংকে ৩৫ বছর সামরিক কারাদ- দেয় মার্কিন আদালত।
সাত বছর জেল খাটার পর ২০১৭ সালে তৎকালীন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার শাস্তি কমিয়ে দেন। ওই বছরের ১৭মে তাকে খালাস করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে চলতি বছরের ১৬ই মে এক গ্র্যান্ড জুরির সামনে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে না চাওয়ায় তাকে ফের গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তিনি ভার্জিনিয়ার আলেক্সান্দ্রিয়া বন্দি শিবিরে আটক রয়েছেন। তিনি যদি অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে প্রমাণ না দেন তাহলে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত তাকে আটক রাখা হবে। এর সঙ্গে আটক থাকাকালীন প্রতিদিন তাকে ১০০০ ডলার করে জরিমানা গুণতে হবে। নভেম্বরে তাকে শাস্তি দেয়া গ্র্যান্ড জুরির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে মুক্তি পাবেন তিনি, কিন্তু ততদিনের জন্য তাকে জরিমানা দিতে হবে।
জাতিসংঘের র‌্যাপোর্টার মেজলার তার চিঠিতে লিখেছেন, আন্তর্জাতিক বিধান ব্যবহার করে নাগরিক অবমাননার জন্য স্বাধীনতা থেকে জোরপূর্বকভাবে দূরে রাখার চর্চা করা হচ্ছে। বিচারিক কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বলপ্রয়োগ ও ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে কঠোর মানসিক নির্যাতনের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে আন্তর্জাতিক বিধান। মেলজার সতর্ক করে বলেন যে, দীর্ঘ সময় ধরে বলপূর্বকভাবে আটক রাখা ব্যক্তিদের মধ্যে ‘পোস্ট-ট্রম্যাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার’ এর উপসর্গ দেখা গেছে পূর্বে। এ ছাড়া, নানা মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি দেখা গেছে। তিনি বলেন, ম্যানিংয়ের আটক কোনো বৈধ নিষেধাজ্ঞা নয়। এটি সীমাহীনভাবে, নির্যাতনের সমান কঠোর প্রগতিশীল বলপ্রয়োগের পদক্ষেপ। এই শাস্তি তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল ঘোষণা করা উচিৎ।
ম্যানিংয়ের আইনজীবীদের যুক্তি, গ্র্যান্ড জুরির সঙ্গে একমত না হওয়ায় তাকে আটক করা অর্থহীন, শাস্তিমূলক ও নির্মম। এতে ম্যানিং তার অবস্থান পাল্টাবেন না।