যশোরে চাচাতো ভাইকে হত্যার দায়ে আপন দুই ভাইয়ের ফাঁসি

0

স্টাফ রির্পোটার ॥ যশোরের ঝিকরগাছায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে চাচাতো ভাইকে হত্যার দায়ে দুই সহোদরকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৪ নভেম্বর) অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জুয়েল অধিকারী এ রায় ঘোষণা করেন।

​দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের ছোট পোদাউলিয়া গ্রামের মৃত ছবেদ আলী সরদারের ছেলে ওসমান ও আলী হোসেন। একই মামলায় অভিযুক্ত ওসমানের স্ত্রী খাদিজা খাতুনকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।

​অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আজিজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

​আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ছোট পোদাউলিয়া গ্রামের নুরুল হকের ছেলে কামরুল আমিন (৩২) সঙ্গে তার চাচাতো ভাই ওসমান ও আলী হোসেনের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল।

​২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নিজের জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণকে কেন্দ্র করে কামরুলের সঙ্গে ওসমান ও আলী হোসেনের বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে ওসমান ও আলী হোসেন ধারালো দা দিয়ে কামরুল আমিনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।

কামরুলকে বাঁচাতে গিয়ে তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী আনোয়ারা, ছোট ভাইয়ের স্ত্রী পারভীন ও ভাইপো আতাউর রহমানও হামলার শিকার হন। চারজনকে কুপিয়ে জখম করে আসামিরা পালিয়ে যায়।

​পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চারজনকেই যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠালে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। আহত বাকি তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

​এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত কামরুলের বাবা রুহুল আমিন সরদার বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে ঝিকরগাছা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২৪ সালের ৩ জুলাই ঝিকরগাছা থানার উপ-পরিদর্শক বনি ইসরাইল আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) জমা দেন।

​সোমবার রায় ঘোষণার দিন সকল আসামির উপস্থিতিতে বিচারক জুয়েল অধিকারী রায় প্রদান করেন। সাক্ষ্যপ্রমাণে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাদের ফাঁসির আদেশ এবং প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অন্যদিকে, মামলার অপর আসামি ওসমানের স্ত্রী খাদিজা খাতুনকে খালাস দেওয়া হয়।

​পিপি আজিজুল ইসলাম বলেন, “হত্যা মামলার মাত্র দুই বছরের মাথায় রায় প্রদান একটি নজিরবিহীন ঘটনা। সরকার পক্ষ এই দ্রুততম রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে।”

​অন্যদিকে, আসামি পক্ষ দাবি করেছে যে তারা ন্যায় বিচার পাননি এবং তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।