যশোরে শিক্ষার্থীকে বেঁধে মারধর ও হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগে মাদ্রাসাশিক্ষক আটক

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে রাইয়ান (৭) নামে এক শিশু শিক্ষার্থীকে আছাড় মেরে হাত ভেঙে দেওয়াসহ দুই ঘন্টা বেঁধে রেখে ব্যাডমিন্টনের র‌্যাকেট দিয়ে মারধরের অভিযোগে আব্দুস সামী (২৭) নামে এক মাদ্রাসাশিক্ষকে গত

শুক্রবার রাতে পুলিশে সোপর্দ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আব্দুস সামী শহরের রেলগেট তেঁতুলতলাস্থ তানজীমুল উম্মাহ প্রি-হিফয মাদ্রাসার শিক্ষক। তিনি শংকরপুর চোপদার পাড়ার শেখ জালাল উদ্দিনের ছেলে।

পুলিশ জানায়, শিশু শিক্ষার্থী রাইয়ান শহরের শংকরপুর মধ্যপাড়ার রাসেল আহমেদের ছেলে। ওই ঘটনায় রাসেল আহমেদ দুই জনকে আসামি করে গত শুক্রবার রাতে কোতয়ালি থানায় মামলা করেছেন। আসামিরা হলেন আব্দুস সামী এবং মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম।

মামলায় রাসেল আহমেদ উল্লেখ করেছেন, দুই বছর আগে তার ছেলেকে ওই মাদ্রাসার হিফয বিভাগে ভর্তি করেন। গত ১২ নভেম্বর সকাল পৌনে ৯টার দিকে একটি কক্ষে আব্দুর রশিদ শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছিলেন। এ সময় আব্দুস সামী সেখানে যান এবং তার ছেলে রাইয়ানের হাত ধরে টেনে নিয়ে আছাড় মারেন। সাথে সাথে রাইয়ানের একটি হাত ভেঙে যায়।

এ অবস্থায় তার চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে চতুর্থ তলার একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখেন এবং হাত বেঁধে ব্যাডমিন্টন খেলার র‌্যাকেট দিয়ে মারধর করেন। ২ ঘণ্টা পর তার ছেলের হাত ফুলে গেলে মামলার অপর আসামি শিক্ষক সাইফুল ইসলাম তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।

এরপর রাসেল আহমেদকে মোবাইল ফোন করে খবর দেওয়া হয়, তার ছেলে অসুস্থ। এ খবর পেয়ে রাসেল আহমেদ হাসপাতালে গিয়ে তার ছেলের হাত ব্যান্ডেজ অবস্থায় দেখতে পান।

মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনার পরপরই শিক্ষক সামী পালিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে তারা মাদ্রাসায় অভিভাবকদের নিয়ে বসেন। সেখানেও সামী হাজির না হওয়ায় পরদিন আবারও বসা হয়। এছাড়া বিষয়টি তাদের ঢাকাস্থ পরিচালনা বোর্ডকে অবহিত করা হয়। এরপর ১৪ নভেম্বর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রের

অভিভাবকেরা চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়িতে এক শালিসে বসেন। সেখানে অভিযুক্ত শিক্ষক সামীকে হাজির করা হয়। ওই সালিশে আহত ছাত্রের অভিভাবকরা ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩২ লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার বিষয়ে ফ্রি ব্যবস্থার প্রস্তাব দিলেও রাইয়ানের অভিভাবকেরা তাতে সায় দেননি। যে কারণে সর্বশেষ সকলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আহত রাইয়ানের অভিভাবকরা আইনি পদক্ষেপ হিসেবে থানায় মামলা করেন। এ সময় অভিযুক্ত শিক্ষক সামীকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই শুভ কুমার রায় জানান, আটক শিক্ষক সামীকে শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।