জনদুর্ভোগ এড়াতে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের ব্যতিক্রমী নির্বাচনী প্রচারণা

0

আকরামুজ্জামান ॥ যশোর-৩ (সদর) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ব্যতিক্রমী নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে ভোটারদের মধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। প্রচলিত কোলাহলমুখর নির্বাচনী রীতির বাইরে গিয়ে তিনি মাত্র দুই থেকে তিনজন সঙ্গী নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এতে জনদুর্ভোগ এড়ানো ছাড়াও ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন সম্ভব হচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

নির্বাচনী মৌসুমে সাধারণত প্রার্থীদের গণসংযোগ মানেই মিছিল, মাইকিং আর ভিড়ে ভরা পথঘাট। এতে প্রায়ই যানজট, শব্দদূষণসহ নানা ভোগান্তিতে পড়েন স্থানীয় মানুষ। তবে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের প্রচারণায় এসবের কোনো চিহ্ন নেই। তিনি প্রতিদিন কয়েকজন ঘনিষ্ট স্বজনকে সঙ্গে নিয়ে শহরের ওয়ার্ড ও বাজারঘাটে ঘুরে ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন, শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন এবং ধানের শীষে ভোট চাইছেন। কোনো মাইকিং বা মিছিল নয়, মানুষের বাড়ির দরজায় গিয়ে হাসিমুখে জানাচ্ছেন পরিবর্তনের আহ্বান।

বিএনপি প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ‘ভোটারই আমাদের শক্তি। আমি চাই না আমার প্রচারণায় সাধারণ মানুষের কষ্ট হোক। মানুষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেই আমি তাদের সমর্থন চাইছি। রাজনীতি মানে মানুষের পাশে থাকা, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা নয়। যেকারণে আমি জনাকীর্ণ এলাকা, যেখানে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বা জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেখানেই দু একজন আপনজনকে সাথে নিয়ে প্রচারণায় যাচ্ছি।’

যশোর চেম্বার অব কমার্স ইন্ড্রাস্ট্রির যুগ্ম সম্পাদক এজাজ উদ্দীন টিপু বলেন, বিএনপির প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের এই প্রচারণা নির্বাচনের সংস্কৃতিতে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। তিনি যশোর বড় বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে দলীয় নেতাকর্মী ছাড়া নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। এতে ব্যবসায়ীরা খুবই খুশি।

যশোর শহরের বড়বাজার এলাকার মুদি দোকানদার গণেশ পাল বলেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দলবল নিয়ে রাজনৈতিক নেতারা গণসংযোগে আসেন। কিন্তু এবার দেখছি ধানের শীষের প্রার্থী দুই একজন লোক আসছেন।

এতে আমাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। একই কথা বলেন, শহরের লোন অফিস পাড়ার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এত শান্তভাবে কোনো শোরগোল ছাড়া একজন প্রার্থী প্রচারণা চালাচ্ছেন, এটা সত্যিই প্রশংসনীয়। এতে বোঝা যায়, তিনি মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

এ বিষয়ে যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের সাধারণ মানুষের মাঝে অসম্ভব জনপ্রিয়তা রয়েছে। তিনি পথে নামলেই হাজার হাজার মানুষ তাঁর পেছনে ভিড়ে। এসব কারণে অনেক সময় তাঁর গণসংযোগ জনদুর্ভোগে পরিণত হয়। এসব দিক বিবেচনায় তিনি নেতাকর্মী ছাড়াই অনেকটা একা-একা নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।

অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বিএনপির প্রয়াত স্থায়ী কমিটির সদস্য, দেশের বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের পুত্র। পারিবারিকভাবে তিনি রাজনীতির সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত। বর্তমানে তিনি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নেতৃত্বের নতুন ধারা তৈরিতেও তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন বলে দলটির নেতাকর্মীরা ছাড়াও সাধারণ মানুষরা জানান।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোরের ছয়টি আসনের মধ্যে সদর আসনটি রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলের কাছেই এ আসনটি মর্যাদার প্রতীক। এবারের নির্বাচনে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের পারিবারিক রাজনৈতিক ঐতিহ্য, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি ও তরুণদের সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক, সবকিছু মিলিয়ে তিনি এই আসনে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারেন। তাঁর শান্ত ও মানবিক প্রচারণা ভোটারদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে বলে অনেকেই মনে করছেন।