যশোরে যুবলীগের ব্যানার তৈরিকালে আটক- ২

বিপুল শাহারুলসহ ১১ জনের নামে মামলা

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে জেলা ছাত্রলীগের (নিষিদ্ধ সংগঠন) সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুলের নির্দেশে জেলা যুবলীগের নামে গোপনভাবে ব্যানার বানানোর সময় দুই জনকে হাতেনাতে আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তি জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিপুলের নির্দেশে ব্যানার তৈরি ও সরবরাহ করছিলেন। পুলিশ বলছে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে এ কাজ করা হচ্ছে, এই ঘটনায় আরও ৮ জনের সংশি্লষ্টতা আছে।

গত বুধবার রাত ১১টার দিকে শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের একটি ডিজিটাল প্রিন্টিং প্রেস থেকে আনোয়ার হোসেন বিপুলের ব্যক্তিগত ম্যানেজার দেব প্রসাদ মল্লিক (৪০) ও প্রিন্টিং প্রেসের মালিক মো. নাহিদ বিল্লাহ (৩৬)কে আটক করা হয়। পলাতক জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুলের দেওয়া অর্থে ও নির্দেশনায় সেখানে ব্যানার বানানো হচ্ছিলো বলে পুলিশ জানিয়েছে।

এ সময় পুলিশ সেখান থেকে ‘শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার কর, অবৈধ আইসিটি বন্ধ কর’ লেখা কয়েকটি ব্যানারসহ দুই জনকে আটক করে। ব্যানারো লেখা ছিলো, সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আনোয়ার হোসেন বিপুল’ ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ যশোর জেলা শাখা।

পুলিশ বলছে, ওই পরিকল্পনার সাথে আটক দুই জন ও আনোয়ার হোসেন বিপুলসহ আরো ৮ জন জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের কর্মকান্ড ব্যহত করাসহ দেশের নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত, রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি এবং জনমনে ভীতি সৃষ্টির জন্য অপরাধমূলক অন্তর্ঘাত কাজে লিপ্ত হওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণের অভিযোগে কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। কোতয়ালি থানা পুলিশের এসআই মো. নাসির উদ্দিন মামলাটি করেছেন।

আটক দেব প্রসাদ মল্লিক (৪০) মনিরামপুর উপজেলার কুশখালী গ্রামের দশরথ মল্লিকের ছেলে বর্তমানে যশোর শহরের ষষ্ঠীতলা পাড়ার শেখর হালদারের বাড়ির ভাড়াটিয়া ও পলাতক আনোয়ার হোসেন বিপুলের ব্যক্তিগত ম্যানেজার। এবং মো. নাহিদ বিল্লাহ (৩৬) ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের আইএনবি ডিজিটাল সিগন্যাগ নামক প্রিন্টিং প্রেসের মালিক।

বিপুলসহ মামলার অপর আসামিরা হলেন, শহরের পুরাতন কসবা কাজীপাড়ার মাহমুদ হাসান বিপুল, শংকরপুর ইসহাক সড়কের ফারুক হোসেনের ছেলে শাহেদ হোসেন নয়ন ওরফে হিটার নয়ন, সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মুন্না, নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ, যশোর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আলমগীর কবির সুমন ওরফে হাজী সুমন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আরবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলাম এবং রামনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান লাইফ।

আটক দেব প্রসাদ মল্লিক পুলিশকে জানিয়েছেন, পলাতক আনোয়ার হোসেন বিপুলের দেওয়া অর্থে ও নির্দেশে তিনি তৈরিকৃত ব্যানার ফেস্টুন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে সরবরাহ করে আসছেন।

এদিকে এসআই নাসির উদ্দিন মামলায় উল্লেখ করেছেন, আটক ও পলাতক আসামিরা বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ব্যাহত করাসহ দেশের নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত, রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি এবং জনমনে ভীতি সৃষ্টির জন্য অপরাধমূলক অন্তর্ঘাত কাজে লিপ্ত হওয়ার ষড়যন্ত্র করছিলেন।

এছাড়া তারা বিগত সরকারের আমলের এমপি ও মন্ত্রীদের সাথে যোগসাজসে ফেস্টুন ও ব্যানার তৈরি করে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করার পরিকল্পনা করছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে এর সত্যতা পাওয়া যায়।

পুলিশ জানায়, আটক দুই জনকে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই অমৃত লাল দাস।