যশোরে নারীর করোনা শনাক্ত, এখনও সরকারিভাবে প্রস্তুত নয় স্বাস্থ্য বিভাগ

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ যশোরে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় এক নারীর করোনা শনাক্ত হয়েছে। একটি বেসরকারি হাসপাতালে জ্বর নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করা পরীক্ষায় বৃহস্পতিবার ধরা পড়ে তার শরীরে করোনা ভাইরাস। তাকে ওই হাসপাতাল থেকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সংক্রামক ব্যাধি ওয়ার্ডের নির্ধারিত কক্ষে রাখা হয়েছে।

এদিকে যশোর স্বাস্থ্য বিভাগ এখনও করোনা শনাক্তের কোন পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত নয়। পরীক্ষা সামগ্রীর জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে ঢাকায়। এছাড়া সামগ্রী পেলেই পরীক্ষার কাজ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হুসাইন শাফায়াত জানান, বিকেলে ইবনে সিনা হাসপাতাল ও ডায়াগনিক সেন্টারের চিকিৎসকরা তাকে জানান সেখানে এক নারীর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তারা র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে এটি পেয়েছেন। হাসপাতাল থেকে এখনও কোন পরীক্ষা করা হয়নি। তবে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হয়েছে এবং সংক্রামক ওয়ার্ডে করোনা আক্রান্তদের জন্য আপাতত নির্ধারিত ৩টি কক্ষের একটিতে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।

যশোর ২৫০শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাাগের চিকিৎসক শাকিরুল ইসলাম জানান, বিকেল সাড়ে ৫টায় ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে ওই রোগী আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতালের ৬বেড বিশিষ্ট সংক্রামক ওয়ার্ডটি আইসোলেশন ওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। গতকাল বিকেল পর্যন্ত ওই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিল ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ১৬ জন।

যশোরের সিভিল সার্জন মাসুদ রানা বলেন, খবর পেয়ে তিনি যশোর জেনারেল হাসপাতালে যান। চিকিৎসকরা তার করোনা আক্রান্তের কথা জানিয়েছেন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। যশোরে সরকারি পর্যায়ে এখনও পরীক্ষা শুরু না হওয়ায় চূড়ান্তভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।

যশোরের ইবনে সিনা হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সহকারী ব্যবস্থাপক আব্দুল হাসিব জানান, ওই নারীর বয়স ৫৫ বছর। তার বাড়ি সাতক্ষীরার কলারোয়ায়। তার কন্যা যশোরে চাকরি করেন। মেয়ের চাকরি সূত্রে যশোর শহরে বসবাস করেন ওই নারী। কাশি জ্বরে আক্রান্ত অবস্থায় দুই দিন আগে তিনি তাদের হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানেই পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে তার শরীরে করোনা ভাইরাস ধরা পড়ে বৃহস্পতিবার। তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। যে কক্ষে করোনায় আক্রান্ত নারী চিকিৎসাধীন ছিলেন কক্ষটি জীবাণুমুক্ত করার জন্য বন্ধ করে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আব্দুল হাসিব।

এদিকে বুধবার যশোর জেনারেল হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত এক পুরুষ রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু সামগ্রীর অভাবে তার পরীক্ষা করা যায়নি। ওই রোগী বৃহস্পতিবার কাউকে কিছু না বলে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন বলে জানান হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হুসাইন শাফায়েত।

ওই চিকিৎসক কর্মকর্তা আরও বলেন, ওই ব্যক্তি যদি করোনা আক্রান্ত হন তাহলে তার মাধ্যমে আরো মানুষের নীরবে আক্রান্ত হওয়ার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। যা ঝুঁকিপূর্ণ।

সিভিল সার্জন বলেন, হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষার যে কিটস আছে সেগুলো পুরনো ও মেয়াদ উত্তীর্ণ। এ জন্য ঢাকায় চাহিদা পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বিগত দিনে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টারে করোনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। তাদেরকে প্রস্তুতি নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। তারা সম্মত হয়েছেন। সব মিলিয়ে আগামী সাত দিনের মধ্যে যশোরে করোনা ভাইরাস শনাক্তের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

যবিপ্রবি’র উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর আব্দুল মাজিদ জানিয়েছেন, তাদের সব প্রস্তুত আছে। সিভিল সার্জন পিসিআর টেস্টের কিটস পাঠালেই তারা দ্রুত করোনা পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ শুরু করবেন।