যশোর শিক্ষা বোর্ড এলাকায় মহাসড়কের ওপর বাস, ভোগান্তি চলাচলে

0

আকরামুজ্জামান ॥ যশোর উপশহর নিউ মার্কেট ট্রাফিক মোড় থেকে শিক্ষাবোর্ডের প্রধান ফটক পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি যানবাহন ‘পার্কিং নিষিদ্ধ’ সাইন বোর্ডেকে করছে পরিহাস।

রাস্তার উপর পার্কিং করা এসব যানবহনের মধ্যে যশোর-মাগুরা সড়কের যাত্রীবাহী বাসই বেশি। সাথে থাকে পণ্য বোঝাই ট্রাক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাস। এ চিত্র নিত্য দিনের। পাকিংএর নিজস্ব জায়গা থাকলেও মাগুরা সড়কের চালকদের অভ্যাস পরিবর্তন হচ্ছে না। ফলে যানজট লেগেই থাকছে। বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

যশোর উপশহর নিউ মার্কেট ট্রাফিক মোড় থেকে পূর্ব দিকে শিক্ষাবোর্ডের প্রাচীর ঘেসে সারি সারি দাঁড় করানো থাকেবিভিন্ন যাত্রীবাহী বাস। যানবাহনের জটলা দেখে মনে হবে যেন পার্কিংয়ের জন্যই ওই স্থানগুলো বরাদ্দ।

অথচ পাশেই সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ‘এখানে কোনোপ্রকার গাড়ী পার্কিং নিষিদ্ধ।’ এ সড়কের এক পাশে দিনভর অসংখ্য গাড়ি থামিয়ে রাখার কারণে গাড়ি চলাচলের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হচ্ছে। ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট লেগে থাকছে । ফলে এই এলাকার যাতায়াতকারীদের ভোগান্তি শেষই হচ্ছে না। ভূক্তভোগীদের অভিযোগ ট্রাফিক পুলিশকে ম্যানেজ করেই প্রতিনিয়ত রাখা হয় এসব গাড়ি। অথচ এই সড়ক দিয়ে যশোর-খুলনা, নড়াইল, ঝিনাইদহ, সাক্ষীরা, বেনাপোল সব রুটেই গাড়ি রাজধানীসহ দক্ষিণের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করে থাকে।

রোববার সকালে নিউ মার্কেট ট্রাফিক মোড় এলাকায় কথা হয় কয়েকজন পথচারির সাথে। তারা জানান, এই সড়কের কারণেই ট্রাফিক মোড়ে সব সময়ই যানজট লেগে থাকে। অথচ ব্যস্ততম এই রাস্তার পাশেই লাইন ধরে রাখা হয়েছে ছোটবড় বাসগুলো। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোনো নজরদারী না থাকায় দিন দিন সমস্যা আরও বাড়ছে বলে তারা অভিযোগ করেন।

শরিফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, দুপুরের দিকে প্রায়ই ট্রাফিক মোড় এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। কখনও কখনও এক থেকে দেড় ঘন্টা যানজটে আটকে থাকতে হয়। এতে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে যাওয়া খুব দুস্কর হয়ে পড়ে।

এই কথা বলেন, শামীম রেজা নামে আরেক পথচারী। তিনি বলেন, যশোর শহরের যানজট নিরসনে পুলিশের তৎপরতা দেখা গেলেও শহরের বাইরে এই অংশে ঠিক তার উল্টো চিত্র। গুরুত্বপূর্ণ এমন একটি সড়ক প্রতিদিন এভাবে সারি সারি বাস রেখে দখল করে রাখার বিষয়টি যেনো কারোর দেখার নেই। সামনে ঈদে ভোগান্তি আরও বাড়বে ।

কথা হয়, ট্রাক চালক ওবায়দুল হকের সাথে। তিনি বলেন, অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে এই সড়ক দিয়ে নির্দিষ্ট গতিতে চলতে পারেনা যানবাহন ও পথচারিরা। কারণ এই সড়কের হাইকোর্ট মোড় থেকে নিউমার্কেট ট্রাফিক মোড় পর্যন্ত অর্ধেক দখল থাকে। বিষয়টি ট্রাফিক পুলিশকেও বলে কোনো কাজ হয়না।

এ বিষয়ে যশোর জেলা পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়ন (২২৭) এর সহসভাপতি মো. আবু হাসান বলেন, ইতোমধ্যে আমরা যশোর মনিহার এলাকা ও তালতলা এলাকা থেকে রাস্তার অবৈধ পার্কিং সরিয়ে দিয়েছি। প্রশাসনের সহযোগিতায় এসব পার্কিং সরানো হয়েছে।

তবে শিক্ষাবোর্ডের সামনে ঢাকা রোডে কিছু রাখা হচ্ছে ঠিক। এর বড় কারণ হচ্ছে ওই এলাকায় নির্দিষ্ট গাড়ি পার্কিংয়ের কোনো জায়গা না থাকা। আশা করা যায় খুব দ্রুত এ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। তিনি বলেন, খাজুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকাকে যানজটমুক্ত রাখতে ইতিমধ্যে বাহাদুরপুর স্কুলের পাশে মালিক সমিতির নিজস্ব অর্থায়নে পার্কিংয়ের নির্দিষ্ট জায়গা করা হয়েছে। এর ফলে মানুষ সুফল পাচ্ছে বলেও এই শ্রমিক নেতা দাবি করেন।

এ বিষয়ে যশোর পুলিশের ট্রাফিক ইনসপেক্টর মাফুজুর রহমান বলেন, আমরা ইতোপূর্বে অনেকবার অভিযান চালিয়েছি, তাদের জরিমানাও করেছি বেশ কয়েকবার। কিন্তু দেখা যায়, আমরা চলে আসার পর আবার তারা গাড়ি পার্কিং করে। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেছেন। মালিক সমিতি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, ঈদ যাত্রাকে নির্বিঘ্ন করতে যশোর ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যার সুফল যশোর শহরবাসী পেতে চলেছে।