ছাতিয়ানতলা খাদেমুল ইসলাম এমিতখানার কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন সাবেক চেয়ারম্যান মুন্না

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি বাজারে অবস্থিত ছাতিয়ানতলা খাদেমুল ইসলাম এমিতখানার নামে মাসে আয়ের লাখ লাখ টাকার হদিস নেই দীর্ঘ ১৭ বছর যাবত। অথচ দীর্ঘদিন ধরে এতিম শিশুরা জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করছে। প্রতি বছর সরকারি- বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ২ কোটি টাকা আয় হয় এই এতিমখানায়। চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মান্নান মুন্না জোর করে কমিটির সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করছেন দীর্ঘ ১৭ বছর। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এতিমখানার টাকা মুন্না দীর্ঘদিন ধরে আত্মসাৎ করে এসেছেন।
অনুসন্ধানকালে জানা গেছে, ১৯৬৪ সালের ৩০ জুলাই ছাতিয়ানতলা খাদেমুল ইসলাম এতিমখানাটি নিবন্ধন পায়।সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সমাজসেবা অধিদপ্তরের ক্যাপিটেশন গ্রান্ট প্রাপ্ত এতিমখানা এটি। বর্তমানে এখানে ৩০ জন এতিম শিশু রয়েছে। এই ৩০ জন শিশুর ঘুমানোর জন্যে রয়েছে ২টি রুম। রুমগুলোর অবসাথা বেহাল। ঠাসাঠাসি করে জরাজীর্ণ রুমে বসবাস করছে এতিম শিশুগুলো। তাদের ব্যবহারের বাথরুমগুলোর অবস্থাও খুব খারাপ। নিরুপায় হয়েই কোমলমতি শিশুরা এই বাথরুম ব্যবহার করছে।
সরেজমিন গিয়ে এলাকাবাসী ও এতিমখানার সুপারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এতিমখানায় প্রতিবছর সরকারি অনুদান আসে ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। এছাড়া প্রতিদিন চুড়ামনকাটি কাঁচা বাজারে থেকে আদায়ের অংক বছরে দাঁড়ায় ৭ লাখ ৩০ হাজার। এলাকাবাসী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বছরে আয় ২০ লক্ষাধিক টাকা। এতিমখানার নিজস্ব মার্কেট থেকে ঘর ভাড়া ও অন্যন্য আয় ১০ লাখ টাকা। এছাড়া রয়েছে এতিমখানার সদস্যদের কাছ থেকে আয়। এর বাইবে প্রতিদিনই বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এখানে দান করে থাকেন। সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটি বছরে মোটা অংকের টাকা আয় করে থাকে। সে টাকা কোথায় কীভাবে খরচ হয় তা কেউ জানে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,এই এতিমখানার সার্বিক দেখাশুনার দায়িত্ব পালন করার কথা সমাজসেবা কর্মকর্তার। কিন্তু আব্দুল মান্নান মুন্না প্রভাব খাঁটিয়ে নিজেই সব কিছু করতেন। নিজের ইচ্ছামত আয়- ব্যয় করেছেন এমিখানার টাকা- পয়সা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রবীণ ব্যক্তি বলেন,মুন্না প্রভাব খাটিয়ে তাদের দলীয় সকল কর্মকান্ড এই এতিমখানায় করতেন। এতিমদের টাকায় খাওয়াতেন নেতাদের।
এ ব্যাপারে এতিমখানার সুপার রবিউল ইসলাম বলেন, আমি এখানে চাকরি করি। পরিচালনা কমিটির নির্দেশ মোতাবেক আমি আমার দায়িত্ব পালন করি। এতিখানার একাউন্টে কত টাকা আছে জানতে চাইলে তিনি জানেন না বলে জানান।
আব্দুল মান্নান মুন্না ৫ আগস্টের পর থেকে পালাতক রয়েছেন। তাই তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।