পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য জনমনে শঙ্কার সৃষ্টি করতে পারে

0

শান্তনু ইসলাম সুমিত ।। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলবে না। চ্যানেল ২৪ কে তিনি বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি তিনি (হাসিনা) পদত্যাগ করেছেন এবং পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতির কাছে আছে। আমরা এটি নিশ্চিত হয়েছি। যদি আইন মন্ত্রণালয় আমাদেরকে তাকে ফিরিয়ে আনতে চিঠি দিতে বলে, আমি তা করব।’
পররাষ্ট্র উপদেষ্টার এই বক্তব্য জনমনে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি করতে পারে । শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেবার পর ভারতেরই অনেক বিশেষজ্ঞ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, এই ঘটনা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে।
১৩ আগস্টে ‘ভারতে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা, নয়াদিল্লির জন্য একটি দ্বিধা’ নামক একটি প্রতিবেদন জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলেতে প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, ‘বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত সৌহার্দ্যপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রাখতে চায় এবং দেশে হাসিনার উপস্থিতি উত্তেজনা সৃষ্টি করুক তা চায় না’
পাকিস্তানে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার অজয় বিসারিয়া ডয়চে ভেলেকে শেখ হাসিনাকে একটি গরম আলুর সাথে তুলনা করেছেন। তার উপস্থিতি ভারতের জন্য একটি সূক্ষ্ম দ্বিধা তৈরি করেছে।
বিসারিয়া ওই সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন যে ‘শেখ হাসিনার উপস্থিতি ঢাকার নতুন অন্তর্বর্তী প্রশাসনের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভারতের প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।’
দিল্লির থিঙ্কট্যাঙ্ক আইডিএসএ-র সিনিয়র ফেলো তথা বাংলাদেশ গবেষক ম্ম্রুতি পট্টনায়ক একটি সাক্ষাৎকারে স্পষ্টভাষায় বলেছেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি শেখ হাসিনা যদি ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় চান, তাহলেও ভারতের উচিত হবে না সেটা মঞ্জুর করা’,
গত ১৬ বছরে সারা দেশের সকল সরকারি প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবসহ সকল দপ্তর আওয়ামী লীগকরণ করা হয়েছে। পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তিকে তিনি ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছেন। গণঅভুত্থানের পর পরিস্থিতি এখনও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ও তাদের ব্যবহৃত অস্ত্র পর্যন্ত উদ্বার হয়নি। ছাত্রদের এখনও সড়ক নিরাপত্তার কাজ করতে হচ্ছে। সারা দেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, এমন অবস্থায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য জনমনে ভয় ও শঙ্কার সৃষ্টি করতে পারে।