বাগেরহাট ও কালীগঞ্জে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে

0

বাগেরহাট ও কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতা ॥ বাগেরহাট ও কালীগঞ্জে বেড়েছে সব ধরনের মাছ ও সবজির দাম। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে গরু, খাসি ও মুরগির মাংসের দাম। শুক্রবার শহরের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব ধরনের মাছের দাম তুলনামূলক বেড়েছে।
বাগেরহাটে এক সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দাম আকার ও প্রকার ভেদে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। সবজির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত।
শুক্রবার বাগেরহাটের বাজারে এক কেজি ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৬শ থেকে ১৮শ টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮শ থেকে ১২শ টাকা, মেদ প্রতিকেজি ৮ শ থেকে ১২শ টাকা, জাবা ৩৫০ থেকে ৫শ, তুলার ডাটি ৪৫০, রুপচাঁদা ১২শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে বাগেরহাটে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মাছের দাম। রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪শ টাকা, কাতলা ৩০০ থেকে ৪শ, ভেটকি ৭০০ থেকে এক হাজার টাকা। হরিনা চিংড়ি, চামি চিংড়ি, টেংরা, ফাইস্যার দাম ছিল ৪শ থেকে ৫শ টাকা। বর্তমানে এসব মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮শ টাকা পর্যন্ত। অসচ্ছলদের পছন্দের মাছ বলে খ্যাত পাঙ্গাশ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত।
এদিকে বাগেরহাটের বাজারে গরুর মাংস ৭৫০, খাসি এক হাজার, ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ২২০ এবং সোনালী ৩০০ ও দেশি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বেড়েছে সবজির দাম। আলু প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০, বেগুন ১৬০ থেকে ১৭০, টমেটো ১৫০ থেকে ১৬০, করোলা ১০০, কাঁচা মরিচ ৩৫০ থেকে ৪০০, লাউ ৪০-৬০, কচুরমুখি ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাউ প্রতিপিস ২০-৩০ টাকা থাকলেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। পুঁইশাক, লালশাক, কমলিশাক, লাউশাক প্রতি আটি আগে বিক্রি হতো ১০ থেকে ১৫ বর্তমানে ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে মিষ্টি কুমড়ো বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ ও পটল ২৫-৩৫ টাকা।
সবকিছুর দাম বৃদ্ধিতে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। কম ক্রয় করে ব্যয় কমানোর চেষ্টা করছেন তারা।
মাছ ক্রেতা মো. আফজাল হোসেন বলেন, আমি মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ। সন্তানদের মুখে আমিষ তুলে দেওয়ার জন্যে পাঙ্গাস মাছ কিনি। কিন্তু সেই পাঙ্গাশ মাছের দামও বেড়েছে কেজিতে ৭০/৮০ টাকা। ১৮০টাকা কেজি দরের সিলভার কার্প মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়।
মাছ বিক্রেতা মো. বাবু বলেন, সাগরে মাছ ধরা বন্ধ। তাই মাছের সরবরাহ কম। এজন্যে দাম বেড়েছে। সাগরের মাছ চলে আসলে মাছের দাম অর্ধেকে নেমে আসবে।
বাজার করতে আসা আলিফ বলেন, বজারের সবকিছুর দাম দ্বিগুণ । মনুষের পকেটে টাকা নেই। এভাবে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেলে আমাদের বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে যাবে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাগেরহাটের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান বলেন, নিয়মিত নিত্য প্রয়োজনীয় বজার মনিটরিং করছি । কোথাও অসংগতি পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।
এদিকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে সবজির দাম এতটাই বেশি যে বাজারে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্রেতাদের । শহরের কালীবাড়ি হাটচাঁদনি বাজার ও কোটচাঁদপুর রোডের নতুন বাজারে গিয়ে দেখা যায় , প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ২৯০-৩০০ , পেঁয়াজ ৯০-১০০, রসুন ২৬০-২৮০, গোলআলু ৬৫-৭০, বেগুন ৯০-১০০, কাঁচকলা ৬০-৭০, মিষ্টিকুমড়ো ৪০-৫০, পটল ৪০-৫০ টাকা। ডিম প্রতি ডজন ১৭০-১৮০, দেশি মুরগি ৫৬০-৫৮০ টাকা , গরুর মাংস ৭০০-৭৫০ , খাসির মাংস ১ হাজার থেকে ১১শ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় হচ্ছে ।
এছাড়া প্রায় সব ধরনের মাছের দামও বেড়েছে। রুই মাছ ১ কেজি বা তার বেশি ওজন হলে ২৯০ থেকে ৩৩০ ও তেলাপিয়া বড় সাইজ ২০০ ও ছোট ১৬০, কাতলা মাছ ২৭০-৩০০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে । সব ধরনের চালে কেজিপ্রতি ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে ।
শহরের হাটচাঁদনি বাজারে আসা খাইরুল ইসলাম নামের একজন ক্রেতা জানান, ১ হাজার টাকা নিয়ে বাজারে এসে যেন বিপদে পড়েছি । একটা কোম্পানিতে সেলসম্যানের চাকরি করে কত টাকা বেতন পাওয়া যায় বলেন? এখন এ টাকায় যা বাজার হবে তা নিয়েই বাড়ি ফিরতে হবে ।