তাপদাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও থেমে নেই কোচিং

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ তীদ্র দাবদাহে যখন দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে, তখন অনেকটা রমরমা ভাবে চলছে যশোরের কোচিং ব্যবসা। প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে কোচিং সেন্টারগুলো যেন নব উদ্যমে জেগে উঠেছে। সকাল থেকে দিনের শেষ পর্যন্ত চলছে এসব কোচিং। দেশে বইছে তীব্র দাবদাহ। যশোরের তাপমাত্রা অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে গরমের তীব্রতা। গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছ জনজীবন। তাপপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়াবিদরা অতি প্রয়োজন ছাড়া দিনের বেলায় বাইরে চলাফেরা না করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের পক্ষ থেকে চলমান তাপদাহ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার দাবি ওঠে। এরপর শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও তাদের অধিভুক্ত সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে যশোরের কোচিং বাণিজ্য চলছে তুঙ্গে। শহরের জজ কোর্ট মোড়স্থ একটি বহুতল ভবনে মেধা বিকাশ, প্যারাডাইস স্পেশাল ব্যাচ, ইউনিক একাডেমি কেয়ার, ম্যাক্স, ডিফেন্স কেয়ার, মোমিনুর স্পেশালসহ আকর্ষণীয় নামের বহু কোচিং প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ভবনের সামনে মাসুম,স স্পেশাল ব্যাচ এবং পাশের গলিতে দীন স্যার পরিচালিত মানবিক বিভাগের সেরা কোচিং এক্সপার্টসহ বিভিন্ন নামের কোচিং সেন্টার রয়েছে। সোমবার বেলা ১২ টার দিকে এই প্রতিবেদক ওই এলাকায় যান। সেখানে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে দেখা যায়, ব্যাচ অনুযায়ী কোচিং কার্যক্রম শেষ করে একের পর এক শিক্ষার্থীরা বের হয়ে আসছে। বিকেলে এই প্রতিবেদক প্রধান পোস্ট অফিস সংলগ্ন হাসান স্যারের কোচিং সেন্টারে যান। সেখানে দেখা যায় কেউ কোচিং শেষ করে বাড়ি ফিরছে, কেউ ভেতরে প্রবেশ করছে। ভেতরে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানের সংকীর্ণ কক্ষে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। এরপর যশোর জিমনেসিয়ামের সামনে গিয়ে দেখা যায়, আলিমুল, স নামের একটি কোচিং থেকে শিক্ষার্থীরা কোচিং কার্যক্রম শেষ করে বাড়ি ফিরছে। সুরাইয়া খাতুন ও তাহসিন নামের দুই শিক্ষার্থী জানায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলেও আমাদের কোচিং সেন্টার বন্ধ হয়নি। যে কারণে দাবদাহ উপেক্ষা করে কোচিং করতে আসছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান, কোচিংয়ে না গেলেও মাস গেলেই টাকা গুনতে হবে। সে জন্য তাদের ঘরে বসিয়ে না রেখে এক প্রকার বাধ্য হয়ে কোচিং সেন্টারে পাঠাচ্ছি। এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মাহফুজুল হোসেন বলেন, সরকারি নিবন্ধন ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে আমাদের কার্যক্রম। কোচিং সেন্টারের কোন নিবন্ধন নেই। তাই এগুলো আমাদের কার্যক্রমের মধ্যে পড়ে না। তীব্য দাবদাহের কারণে সরকার যেহেতু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করেছে, সেহেতু কোচিং সেন্টার গুলো বন্ধ রাখা উচিত। অবশ্য সরকার কোন সময় কোচিং সেন্টারের পক্ষে না। হাসান স্যারের কোচিং সেন্টারের পরিচালক হাসানুজ্জামান বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। তাই শিশুদের পড়ালেখার মধ্যে রাখতে কোচিং সেন্টার চালু রাখা হয়েছে। তা না হলে তারা বই বিমুখ হয়ে যাবে।