কৃষি উপকরণের দাম বেড়েছে

0

সাইফুর রহমান সাইফ॥ যশোরের নওয়াপাড়া একটি শিল্প শহর ও নৌবন্দর । এটি সার, সিমেন্ট, চাল, কয়লা,পাথরসহ আমদানিপণ্যের বড় মোকাম। রেল ও নৌ সুবিধার কারণে এখানে সরাসরি কিংবা চট্টগ্রাম হয়ে বিদেশ থেকে পণ্য আসে।
এখানকার যশোর-খুলনা মহাসড়ক থেকে দক্ষিণ- পশ্চিমে নেমে গেছে একটি সড়ক। সড়কটি মনিরামপুর পর্যন্ত গেছে। এ সড়কের দু ধারে রয়েছে অসংখ্য দোকান। এর ভেতর বেশ কিছু সার ও কীটনাশকের দোকান। দোকানগুলোতে পাইকারি ও খুচরো দুই রকম বিক্রি হয়। সড়কটি রেলপথ ছুঁয়ে গেছে। রেলপথের ধারে নিউ সাথী এন্টারপ্রাইজ।
দোকানটিতে সারের দাম জানতে চাইলাম। অমনি পঞ্চাশোর্ধ এক ব্যক্তি বলে চললেন, দিনি দিনি সবকিছুর দাম বাড়তিছে। সার, ওষুধ (কীটনাশক), সেচ- সব কিছুর। আমাদের হইছে জ্বালা। কিনতি গিলি দাম বেশি, বেচতি গিলি নেই।
ইয়াসিন আলী নামের লোকটি দোকানের এসেছিলেন সার কিনতে।
দোকান মালিক হুমাউন কবির জানালেন সব ধরনের সার ও কীটনাশকের দাম বেড়েছে। সরকারের নিয়ন্ত্রণে বিক্রি করা সারের দাম বেড়েছে বছর খানেক আগে। অন্য সারের দাম সময়ে সময়ে বাড়ছে। দাম বাড়ছে কীটনাশকেরও।
তিনি জানান, ইউরিয়া প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭ টাকা দরে। প্রতি ৫০ কেজির বস্তা ১৩৫০ টাকা। এক বছর আগে প্রতি বস্তার দাম ছিল ১১০০ টাকা। আর প্রতিকেজি ২২ টাকা। টিএসপির দামও একই। বেড়েছেও সমান তালে। ডিএপির দাম এক বছর আগে ছিল ১৬ টাকা কেজি। ৮০০ টাকা বস্তা। এখন দাম কেজি প্রতি ২১ টাকা। আর বস্তা ১০৫০ টাকা।
তিনি জানান, সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই এরকম সারের ভেতর দস্তার দাম ৩ মাস আগে ছিল প্রতিকেজি ৩০০ টাকা। এখন ৩২০ টাকা। বোরন সারের দাম এখন প্রতিকেজি ৮৬০ টাকা। এক বছর আগে ছিল ৩২০টাকা। সালফারের দাম প্রতিকেজি ১৬০ টাকা। এক বছর আগে ছিল ১৫০টাকা। এছাড়া কোম্পানি ভেদে দামের ভিন্নতা আছে। যে যেভাবে পারছে সেভাবে দাম বাড়াচ্ছে।
হুমাউন কবির আরো জানান, কীটনাশকের দাম প্রতি ৫০ গ্রামে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। মাজরা পোকা দমনে নানা কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহার হয়ে থাকে। এর ভেতর একটি কেম্পানির কীটনাশকের দাম এখন ২৩০টাকা। নিকট অতীতে ছিল ২১০। এ হিসেব প্রতি ৫০ গ্রামে।
ভবদহ পানি নিষ্কাষণ সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব চৈতন্য কুমার পাল দৈনিক লোকসমাজকে জানান, সব ধরনের কৃষি উপকরণের দাম বেড়েছে। সার, বীজ, কীটনাশক, পানি বা সেচ- সবকিছুর।
তিনি জানান, প্রতিবিঘা জমিতে মই দিতে খরচ ৪০০ টাকা ও সেচে ৩০০০ থেকে ৭০০০ টাকা। যে যেভাবে পারছে সেভাবে নিচ্ছে। এছাড়া দোকানদাররা সারে প্রতিকেজিতে ২/৩ টাকা বেশি নিচ্ছে।
ব্যবসার পাশাপাশি কৃষিকাজ করেন যশোরের নওয়াপাড়া পৌরসভা এলাকার মীর অলিয়ার রহমান। তিনি জানান, ধানের বীজে প্রতিকেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। হিরা ধানের বীজ কোম্পানি ভেদে ৪০০ থেকে ৫০০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বালাম বীজ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে।