কেশবপুরে হাজার বিঘা জমির বোরো আবাদ অনিশ্চিত

0

জয়দেব চক্রবর্তী, কেশবপুর (যশোর)॥ কেশবপুরে বর্ষার পানি নিষ্কাশনের খাল ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় গরালিয়া বিলসহ একাধিক ছোট মাছের ঘেরের হাজারের অধিক বিঘা জমিতে বোরোধানের আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ঘেরের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিলের ভেতর পানি নিষ্কাশনের খালটি পুনর্খননের দাবি জানিয়েছেন বিল পাড়ের মানুষ।
কেশবপুর উপজেলার সদর ইউনিয়ন, পাঁজিয়া ও মঙ্গলকোট ইউনিয়নের গ্রামসমূহ নিয়ে গরালিয়া বিল। এই বিলের সাথে ব্যাসডাঙ্গা, পাঁচবাকাবর্শি, রাজনগর বাঁকাবর্শি মাগুরাডাঙ্গা, খতিয়াখালি, সুজাপুর বড়েঙ্গা, কনন্দপর্পুর, মাগুরখালি বিলের অধিবাসীরা গরালিয়া বিলের সুবিধাভোগী। দীর্ঘদিন পানি জমে থাকার কবল থেকে মুক্তি পেয়েছে ঘের ব্যবসায়ীরদের মাছ চাষের কারণে। বর্ষা মৌসুমে ঘেরে ৬ মাসের জন্যে লিজ নিয়ে মাছ চাষ হয়ে থাকে এবং বোরো ধানের মৌসুমে ধানের চাষ করে থাকেন বিল পাড়ের কৃষকরা। ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে ঘেরের পানি সেচ দিয়ে খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে শ্রীহরি নদীতে পড়ে। ঘের মালিকরা সেচ দিয়ে বোরোধান মৌসুমে চাষের উপযোগী করে আসছিলেন।
গরালিয়া বিলে বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের জন্যে ব্যাসডাঙ্গা বিলের ব্রিজ হতে বড়েঙ্গা বিলের স্লুইসগেট পযর্ন্ত দীর্ঘ একটি খাল খনন করা হয়েছিলো ৮০-র দশকে। কিন্তু দীর্ঘদিনে বিলের পানি সেচের মাধ্যমে নিষ্কাশনের কারণে খালের তলদেশে পলি জমে যায়। যার কারণে বিলের চেয়ে খালের তলদেশে উঁচু হয়ে দীর্ঘদিনের মরা খালে পরিণত হয়ে পানি ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। যার কারণে মাছের ঘেরের পানি নিষ্কাশনের কোনো সুযোগ পাচ্ছেন না ঘের মালিকরা। আর এই কারণে বিলসমূহে বোরোধান আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
ব্যাসডাঙ্গা গ্রামের কৃষক রেজাউল হক, মাগুরডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, ৬ মাস চুক্তিতে জমি লিজ দিয়েছি। বোরো মৌসুমে ধানের চাষ করে এক সাথে সারা বছরের খাবারের ব্যবস্থা হয়ে থাকে। তাছাড়া ধানের বিচালী, পল, নাড়া সংরক্ষণ করে বাড়িতে গবাদিপশু পালন করে থাকি। ঘেরের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না হওয়ায় বোরোধান আবাদ অনিশ্চিত হয়ে গবাদিপশু পালনও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সরকারের সহযোগিতায় বিলের খালটি যদি পুনর্খনন করা হয় তাহলে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।
ঘের ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান আসাদ সাংবাদিকদের বলেন, বিলের পানি নিষ্কাশনের খাল ভরাট হয়ে গেছে। যার কারণে খালে বিলের পানি ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে গেছে। ফলে ঘেরের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। বিলের পানি সেচের মাধ্যমে খালে ফেলা’র পরে অনেক স্থান থেকে ভেড়ি ছুটে যেয়ে আবার প্লাবিত হয়ে যায়।