চৌগাছায় শীতের সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম খুব একটা কমেনি

0

এম, এ, রহিম, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছার বাজারে শীতের সবজি আসতে শুরু করেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৈরী আবহাওয়ার জন্য এ বছর উপযুক্ত সময়ে শীতের সবজি চাষ শুরু না হওয়ায় প্রায় এক মাস পরে শীতের সবজি আসতে শুরু করেছে। এ কারণেই দাম তুলনামূলক একটু বেশি। আর ক্রেতাদের অভিযোগ বাজারের অন্যসব পণ্যের সাথে তাল মিলিয়েই মৌসুমী সবজি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।
দেশের সবজি ভাণ্ডারখ্যাত যশোরে জেলার অন্যতম উপজেলা চৌগাছা। দেশের মোট চাহিদার প্রায় ২৫ শতাংশ সবজিই এ উপজেলা থেকে সরবরাহ হয়। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠে নানা জাতের সবজি প্রায় বছর জুড়েই চাষ হয়। তবে শীত মৌসুমকে ঘিরে এ উপজেলার চাষিরা প্রচুর পরিমাণ শীতের সবজি চাষ করলেও এবছর প্রকৃতির বৈরী আবহাওয়ার কারণে তারা অনেক পিছিয়ে পড়েছেন। অন্যান্য বছরে এই সময়ে বাজারগুলোতে আগাম জাতের শীতকালীন সবজিতে ভরপুর থাকলেও দীর্ঘ অনাবৃষ্টি ও খরার কারণে উৎপাদন সময় প্রায় একমাস পিছিয়ে অবশেষে বাজারে আসতে শুরু করেছে শীতের সবজি। তবে বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়লেও দামে অসন্তুষ্টি ক্রেতাসাধারণ।
সোমবার (৬ নভেম্বর) উপজেলার সাপ্তাহিক হাটবার সকালে চৌগাছা বড় কাঁচা বাজারে সবজি আড়তে দেখা যায়, পাইকার ও খুচরা বাজারে প্রচুর শীতের সবজি উঠেছে। মুলা, মেটেআলু, বেগুন, ফুলকপি, মানকচু,পটল, ঝিঙে, পেপে, বরবটি, শিম, লাউ, মিষ্টি কুমড়ো, টমেটো, বাঁধাকপিসহ আরও অনেক শীতের সবজি আড়ৎ ও দোকানগুলোতে থরে থরে সাজিয়ে রাখা। তবে দাম তেমন কমেনি।
চৌগাছা বাজারে সবজি কিনতে আসা মমিনুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য বছরে এই সময়ে বাজারে শীতের সবজির দাম অনেক কম থাকে। মৌসুমী সবজি কোনটিই ৫০ থেকে ৬০ টাকার নিচে নেই। এক কেজি টমেটা ১৫০ টাকা, শিম বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি, এক কেজি মিচুড়ি ১২০ টাকা, মেটে আলু ১১০ টাকা কেজি, বাঁধাকপি, ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, ভেন্ডি ৭০ টাকা। সবজি কিনতে গেলে অন্য কোনো বাজার করা সম্ভব হবে না। এদিকে রান্নার জন্য যেগুলো না হলেই নয় গোল আলু ৬০ টাকা, পিয়াজ ১২০ টাকা ও রসুন ২০০ টাকা কেজি।
স্কুল শিক্ষক মিলন হোসেন বলেন, নিত্যপণ্যের অন্য সব সামগ্রীর সাথে প্রায় সারাবছরই সবজির দাম থাকে চড়া। শীতের সবজি বাজারে উঠলেও তা কমছে না। তিনি বলেন, সবজি কিনতে গেলে আর কোনো বাজার করা যাচ্ছে না। তবে পাইকারি বাজারে সবজির দাম কিছুটা কম। বড়-বড় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করেই এভাবে সবজির দাম উর্ধ্বমুখি রেখেছে।
খুচরো ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, অন্যান্য বছরে এই সময়টা বাজারে শীতের সবজিতে ভরে যায়। এ বছর তুলনামূলক সরবরাহ কম। বৈরী আবহাওয়ার কারণে সবজির উৎপাদন কম হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে বাজার স্বাভাবিক পর্যায়ে আসবে। সবজি চাষের মূল সময়ে এ বছর বৃষ্টির পানি হয়নি। এ কারণে সবজির উৎপাদন কম। তাই কয়েক মাস আগে থেকেই সবজির দাম চড়া। খুচর বাজারে সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। আর ১০/১৫ দিনের মধ্যে পুরোদমে শীতের সবজি বাজারে উঠবে। তখন সবজির দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।
চৌগাছা কাঁচা বাজারের আড়ৎ মালিক আজিজুর রহমান দুদু বলেন, এ বছর সবজি উৎপাদন কম হচ্ছে। যে কারণে মোকামে কম তাই সবজির দাম বাড়তিতে বিক্রি হচ্ছে। এর ফলে আমরা আড়ৎদাররাও বাধ্য হয়ে বেশি দামে সবজি বিক্রি করছি। তিনি বলেন, সবজির দাম হয়তো এ বছর তেমন একটা কম হবে না। এর বড় কারণ হলো, সবজি উৎপাদনের খরচের সাথে পরিবহন, শ্রমিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় সবজির বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে।