চৌগাছায় আর্থিক সংকটে দিঘলসিংহা হালদার পাড়ায় দুর্গোৎসব হচ্ছে না

0

এম. এ. রহিম চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছা উপজেলার দিঘলসিংহা হালদার পাড়ায় অর্থের অভাবে এবার দুর্গোৎসব হচ্ছে না। বর্তমানে অভাব আর অর্থ সংকটে পড়েছেন নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো। সারাদেশে সনাতন ধর্মালম্বীদের বড় উৎসব দুর্গাপূজা। এ উৎসবের ১৫ দিন থাকতে এলাকার মেয়ে ও জামাইরা বাপের বাড়িতে আসতে শুরু করেন। বয়ে চলে আনন্দের ফোয়ারা। এলাকা জুড়ে শুরু হয় পূজার আনন্দ। পূজায় মন্দির এলাকায় বসে মেলা হরেক রকমের পশরা।
সরেজমিনে শনিবার উপজেলার সদর ইউনিয়নের দিঘলসিংহা গ্রামের হালদার পাড়ায় গেলে চোখে পড়ে এ পাড়ার রাধা-গোবিন্দ মন্দিরে হচ্ছে না দুর্গাপূজার অনুষ্ঠান। নেই ঢাক, শঙ্খ ও উলুর ধ্বনি। কপোতাক্ষ নদের পাড়ে অবস্থিত এ মন্দিরে নেই মা দুর্গার প্রতিমা নেই কোনো পুরোহিত।
রাধা-গোবিন্দ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক শ্রীরাজ কমল বিশ্বাস বলেন, বাপ-ঠাকুরদার সময় থেকে প্রতিবছর আমাদের মন্দিরে নামযোগ্যসহ সকল প্রকার পূজা পালন করা হয়। এবার আর্থিক সংকটের কারণে পূজা করা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের যে আয় তা দিয়ে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। আমাদের পাড়ার অনেক পরিবার কপোতাক্ষ নদে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। নদ খননের ফলে জলের স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা পড়েছে। তাই নদে মাছ নেই। এই সময় আমরা বড়শি, জালসহ বিভিন্ন উপকরণ ও ডোঙ্গা ব্যবহার করে মাছ ধরতাম, সেই মাছ বিক্রি করে সংসার চলতো। এখন আর মাছ ধরা সম্ভব হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে অনেকে বাপ-দাদার পেশা পরিবর্তন করছে। বর্তমান নদে মাছ ধরার কোনো উপায় নেই, যারা মাছ ধরে সংসার চালাই তাদের ব্যাপক সমস্যা।
গ্রামের পাচু কুমার বিশ্বাস (৩৫), ছায়ারানী (৫২), যুদিষ্টি কুমার বিশ্বাস (৫৩), সন্তোষ কুমার বিশ্বাস (৫৩), শোভা রানী (৭০), মহাদেব বিশ্বাস (৩০), দিনো বন্ধু বিশ্বাস (৬৫), পুতুল রানী বিশ্বাস (২২) ও চিনিবাস কুমার (৫৩) তারা সকলেই বলেন, আমাদের যে আয় তা দিয়ে বর্তমানে নিত্যপণ্যের দামের সাথে দৌড়ে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। বাপ-ঠাকুরদার সময় থেকে প্রতিবছর আমাদের মন্দিরে নামযজ্ঞসহ সকল প্রকার পূজা-পার্বন পালন করা হলেও এবার আর্থিকসংকটের কারণে দুর্গা পূজার অনুষ্ঠান হচ্ছে না।
উপজেলা হিন্দুঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ বলাই চন্দ্র পাল বলেন, উপজেলার ৪৯ টি মন্ডপে দুর্গা পূজা উপলক্ষে সরকারি ভাবে প্রতিটি মন্দিরে থোক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দিঘলসিংহা রাধা-গোবিন্দ মন্দিরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগযোগ করলে তারা বলেন এ বছর মন্দির সংস্কার কাজে বেশ কিছু টাকা খরচ হয়ে গেছে। ফলে আর্থিক সংকটের কারণে দুর্গা পূজা করা সম্ভব হবে না।