হাজারো মানুষের শোকাবহে অন্তিম শয়ানে বিএনপি নেতা বজলুর রহমান

0

মজনুর রহমান ও মাসুদ রানা বাবু॥ হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে  রোববার মনিরামপুর উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা বজলুর রহমানের নামাজে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এদিন বেলা সোয়া ১১টার দিকে উপজেলার নেঙ্গুড়াহাট ফাজিল মাদ্রাসা মাঠে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে আটঘরা গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
নামাজে জানাজায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক (খুলনা বিভাগীয়) সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যবসায়ীক, পেশাজীবীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ।
অনিন্দ্য ইসলাম অমিত প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা ও গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতেই প্রমাণ হয় তিনি এলাকায় ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা। তার মৃত্যুতে এলাকাবাসী হারালো একজন সজ্জন রাজনীতিককে। তেমনি বিএনপি হারালো একজন জাতীয়তাবাদী বীর সেনানীকে।
জানা যায়, মনিরামপুর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুছার ছোটভাই চালুয়াহাটি ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও বারবার নির্বাচিত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিসে ভুগছিলেন। গত জুলাই মাসে চিকিৎসার জন্য তাকে ভর্তি করা হয় ভারতের হায়দ্রাবাদের বিশেষায়িত এআইজি হাসপাতালে। তার লিভার (যকৃত) সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সেখানকার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শে বজলুর রহমানের একমাত্র ছেলে কলেজছাত্র ওয়াসিফ আহমেদ শুভর দেহে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে লিভারের ৭৫ ভাগ নিয়ে বজলুর রহমানের দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। কিছুদিনের মধ্যে ছেলে শুভ পুরোপুরি সুস্থ হন। বজলুর রহমানের অবস্থাও দিন দিন উন্নতির দিকে ধাবিত হয়। কিন্তু হঠাৎ করেই বজলুর শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখা দেয়।
অবশেষে গত বুধবার (৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে তিনি ইন্তিকাল করেন। ভারত থেকে বিমানযোগে শনিবার সন্ধ্যার পর তার মরদেহ আনা হয় ঢাকার শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। সেখান থেকে বজলুর রহমানের মরদেহ আনা হয় তার প্রিয় চালুয়াহাটি ইউনিয়নের আটঘরা গ্রামের নিজ বাড়িতে। এ সময় সেখানে স্বজনসহ এলাকাবাসীর আর্তনাদে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। দলমত নির্বিশেষে হাজার হাজার মানুষ বাড়িতে গিয়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা বজলুকে একনজর দেখার জন্য ভিড় করেন।
পূর্ব নির্ধারিত নামাজে জানাজা বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১০ টার মধ্যে নেঙ্গুড়াহাট ফাজিল মাদ্রাসা মাঠে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। জানাজাপূর্ব আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, মনিরামপুর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মুছা, মনিরামপুর থানার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন, পৌর বিএনপির সভাপতি খায়রুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান মিন্টু, কেশবপুর থানা বিএনপির আহ্বায়ক মশিয়ার রহমান, পৌর সভাপতি আবদুস সামাদ বিশ্বাস, মো. আলাউদ্দিন, জেলা জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আবদুর রশিদ, মনিরামপুর থানা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি ইবাদুল ইসলাম মনু, আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হামিদ সরদার।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার রহমান খোকন, গোলাম রেজা দুলু, মিজানুর রহমান খান, শরফুদ্দৌলা ছোটলু, অ্যাডভোকেট এমএ গফুর, থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মফিজুর রহমান, অ্যাডভোকেট মকবুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আমজাদ হোসেন লাভলু, কৃষকলীগের সভাপতি আবুল ইসলাম।