সরকার আইনের অপব্যাখা দিয়ে খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে চায়: মির্জা ফখরুল

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার আইনের অপব্যাখা দিয়ে বন্দি রেখে খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে চায়। তারা জানে খালেদা জিয়া যদি আবার সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন তাহলে তাঁর ডাকে জনগণ সাড়া দিয়ে এই অবৈধ সরকারের সব অবিচার ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। তছনছ হয়ে যাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা।
গতকাল সোমবার বিকেলে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও সকাল ১১টা থেকে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা।
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেত্রী। তিনি ক্ষমতায় এসেই কৃষকদের ২৫ বিঘা পর্যন্ত খাজনা মওকুফ করেন। ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ মওকুফ করেন। আর এখন ঋণের কারণে কৃষকের কোমরে দড়ি ঝুলিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরা লুটেরা সরকার। এরা দেশের টাকা লুট করে বিদেশে কোটি কোটি টাকা খরচ করে বাড়ি করছে। অথচ, আজ কৃষক ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। সারের দাম তিনগুণ বেড়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সব জায়গা সিন্ডিকেট। আওয়ামী লীগ সিন্ডিকেট করে টাকা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। এমন একটি ব্যবস্থা কায়েম করছে যে, সব টাকা আজ ওদের পকেটে। আজ কৃষক ভাইদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকার কৃষকদের যে ধান কিনে সেখানেও কমিশন। বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতার ওপরও ওরা কমিশন বসায়। সত্যিকারের ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারছে না। আওয়ামী ব্যবসায়ীরা আজ ব্যবসা করছে। সাধারণ মানুষ চাকরি পায় না। বিশ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে চাকরি নিতে হয়।
তিনি বলেন, ‘আজ খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন আইন দেখানো হচ্ছে। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) কানের চিকিৎসার জন্য বন্দি থাকা অবস্থায় বিদেশ যাননি? আসলে তারা খালেদা জিয়াকে ভয় পায়। এরা জোর করে তাকে (খালেদা জিয়া) বন্দি করে রেখেছে। আজ মনে হচ্ছে শাসকরা রাজা আর আমরা প্রজা। এজন্য আমরা যুদ্ধ করিনি। আমরা রাজতন্ত্রের জন্য নয়, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই মুক্তিযুদ্ধ করেছি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে শিক্ষা ব্যবস্থাসহ সব কিছু ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সব জায়গায় দলীয়করণ। মেগা দুর্নীতি করার জন্য মেগা উন্নয়নের নামে উড়াল সেতু, টার্মিনাল বানাচ্ছেন। জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে আমরা ছাত্রাবস্থায় গান গেতাম ২০ টাকায় তেল খেয়ে স্বর্গে যাবোগো..। আজকেও কৃষকরা গান গাচ্ছেন ফ্লাইওভার, টার্মিনাল দিয়ে স্বর্গে যাবোগো?’
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বিরুদ্ধে সরকার লেগেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন জায়গায় তাঁর বিরুদ্ধে বিষাদগার করা হচ্ছে। অথচ, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির বাজার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশকে আজ কোথায় নিয়ে যাচ্ছে এ সরকার? এ মাসে সবচেয়ে রেমিট্যান্স কম এসেছে। কারণ, এদেশের প্রতি মানুষের কোনো আস্থা নেই। এখনও সময় আছে যদি সংকট দূর করতে চান, দেশের ভাল চান তাহলে মানে মানে কেটে পড়ুন। তা না হলে দেশের মানুষ জানে কিভাবে বিদায় করতে হয়। আজকে সবাই এ ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে জেগে ওঠেছে।
কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন শাহজাহান ওমর, বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।