যবিপ্রবিতে নিজ দলের কর্মীকে পেটাল ছাত্রলীগ নেতা

0

যবিপ্রবি সংবাদদাতা॥ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) নিজ দলের এক কর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী আসিফ আল মাহমুদ শাহরিন রহমান। তিনি একই বিভাগের ছাত্রলীগের সভাপতি। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নাজমুস সাকিব।
বৃহস্পতিবার যবিপ্রবির শহীদ মসীয়ূর রহমান হলের ১০৬ নম্বর কক্ষে দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটির দিন এ ঘটনায় হওয়ায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ও হল প্রভোস্ট ড. আশরাফুজ্জামান জাহিদকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শাহরীন রহমান বলেন, যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নাজমুস সাকিব ও আসিফ আল মাহমুদ ২১৫ নং কক্ষে আমাকে ডেকে নিয়ে প্রথমে আমার বরাদ্দ রুম (১০৬নং কক্ষ) ছেড়ে হলের ১০৩ নম্বর কক্ষে উঠতে বলেন। ১০৩ নম্বর কক্ষে না ওঠায় কিছুক্ষণ পরে সাকিব ও আসিফ ১০৬ নম্বর কক্ষের সামনে থেকে আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে রুমে ঢুকিয়ে দুজনেই আমার গলা চেপে ধরে ও মুখ, মাথায় ও শরীরে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এক পর্যায়ে রুম পরিবর্তন না করলে হল ও ক্যাম্পাস ছাড়ার হুমকি দেন। তারা বলেন, তুই ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানাকে জানা, কিছুই করতে পারবিনা আমাকে। এই ঘটনার পর আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এছাড়া ঘটনাটি আমি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য স্যার ও শমর হলের প্রভোস্ট স্যারকে মুঠোফোনে অবহিত করেছি।
এ বিষয়ে যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নাজমুস সাকিব বলেন, শাহরীন ১০৬ নম্বর রুমের স্থায়ী বাসিন্দা নন। তিনি গণরুমের সিট প্রাপ্ত শিক্ষার্থী। আমরা তাকে সিট পরিবর্তন করার কথা বলি। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে মারধর করার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। হলে সিট পরিবর্তন করানোর অধিকার তার আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি এই বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
ছাত্রলীগ নেতাদের ওপর আনা অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, এই সম্পর্কে আমি অবগত নই। তবে এমন কোন ঘটনা ঘটে থাকলে যদি তদন্তের সাপেক্ষে প্রমাণিত হলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
আরেকজন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আসিফ আল মাহমুদকে একাধিকবার মোবাইলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
শহীদ মশিয়ূর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. আশরাফুজ্জামান জাহিদ বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি এবং জানার পর প্রভোস্ট বডি সরজমিনে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ১০৬ নম্বর রুমে থকার ব্যবস্থা করবো। মারধরের বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী পরবর্তীতে লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মোবাইলফোনে জানানোর পর আমি হল প্রভোস্টকে ফোন দিয়ে বলি তাকে সকল প্রকার সহযোগিতা করতে। শিক্ষার্থীদের বরাদ্দকৃত কক্ষ থেকে কাউকে জোরপূর্বক বের হতে বাধ্য করা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও ঘৃণার কাজ। প্রভোস্ট তদন্ত প্রতিবেদন দিলেই আমি ব্যবস্থা নেব।