রাজগঞ্জে আগাম জাতের শিম চাষে লাভবান চাষি

0

 

ওসমান গণি, রাজগঞ্জ (যশোর) ॥ শিম শীতকালিন সবজি। কিন্তু গ্রীষ্মে উচ্চ ফলনশীল আগাম জাতের লাগানো শিম চাষ করে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। যশোরের মনিরামপুর উপজেলার বন্যাকবলিত মশ্মিমনগর ইউনিয়নের রামপুর-শাহপুর গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে চাষ করা হয়েছে এই উচ্চ ফলনশীল আগাম জাতের শিম। বর্তমান বাজারে আগাম জাতের এই শিম ১৮০টাকা থেকে ২০০ কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। আর চাষিরা ক্ষেত থেকে প্রতিকেজি শিম পাইকারি বিক্রি করছেন ১৪০ থেকে ১৫০টাকা দরে। ফলে উচ্চ ফলনশীল আগাম জাতের শিম চাষ করে গ্রামের চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে।
সরজমিনে উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের চালুয়াহাটি ইউনিয়নের মোবারকপুর ও চালুয়াহাটি গ্রাম মশ্মিমনগর ইউনিয়নের রামপুর-শাহপুর ও হাজরাকাটি গ্রাম এবং রোহিতা ইউনিয়নের বাসুদেবপুর ও রোহিতা গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, ফুলে ফুলে ভরে গেছে প্রতিটা শিমগাছ। এ অঞ্চলের চাষিরা শিমক্ষেত পরিচর্যায় বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। চাষিরা বলছেন, চলতি মৌসুমে সার ও কীটনাশকের দাম অনেকটা বেশি। তারপরও পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি শিমের দাম ১৪০ থেকে ১৫০টাকায় বিক্রি হওয়ায় বেশ কিছু টাকা লাভ হচ্ছে। উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের রাজগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার মাঠ এরই মধ্যে শীতের আগাম জাতের শিমে ভরে উঠেছে। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে উচ্চ ফলনশীল জাতের সারি সারি শিম গাছ। মাঠের পর মাঠ শিমের আবাদে ভরে গেছে। নারী-পুরুষ মিলে শিমের ক্ষেতে কাজ করছেন।
রাজগঞ্জ বাজার সংলগ্ন রামপুর-শাহপুর গ্রামের প্রধান সড়কের পাশে লুৎফর রহমান নামের এক শিম চাষি তার ৪৮ শতকের দুই বিঘা জমির পরিচর্যা করছেন। কথা হয় এ শিম চাষির সাথে। তিনি জানান, উচ্চ ফলনশীল আগাম জাতের শিম চাষ করে বেশ লাভবান হয়েছেন তিনি। গত ১ আগস্ট থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত তিনি ১৯ হাজার ২শ টাকার শিম বাজারে বিক্রি করেছেন। ফলে আগাম লাগানো এ শিম গাছ থেকে চলতি মৌসুমের ৬ মাস পর্যন্ত তিনি ২লাখ ২৫ হাজার থেকে ২লাখ ৩৫ হাজার টাকার শিম বিক্রি করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে যদি বাজার ভালো থাকে তাহলে ৩লাখ টাকার মত শিম বিক্রি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে জানান এ চাষি।
মশ্মিমনগর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, প্রতিবছরই বৃহত্তর এ অঞ্চলে আগাম জাতের শিমের চাষ হয়। এবারও হয়েছে। এলাকার চাষিরা ইতিমধ্যে ক্ষেত থেকে শিম তুলে রাজগঞ্জ বাজারে কয়েকদফা বিক্রিও করেছেন। বর্তমান বাজারে উচ্চ ফলনশীল আগাম জাতের এই শিমের দাম ভালো পাওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে বলে মনে করেন এ জনপ্রতিনিধি।
মনিরামপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসাধারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা অঞ্জলী রানী জোদ্দার জানান, বৃহত্তর মনিরামপুর উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৭টি ইউনিয়নের ২৪৯টি গ্রামে চলতি মৌসুমে ৩৭ হেক্টর জমিতে ২৬৫জন চাষি উচ্চ ফলনশীল জাতের আগাম শিম চাষ করেছেন । শিমের ফলন ও বাজারদর ভালোই পাচ্ছেন চাষিরা। তবে সবচেয়ে বেশি শিম চাষ হয়েছে উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের রাজগঞ্জসহ চালুয়াহাটি ইউনিয়নের মোবারকপুর, চালুয়াহাটি, মশ্মিমনগর ইউনিয়নের রামপুর-শাহপুর, হাজরাকাটি, এবং রোহিতা ইউনিয়নের বাসুদেবপুর ও রোহিতা গ্রামে। মনিরামপুরের আগাম জাতের শিম দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হয়ে থাকে বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।