হবিগঞ্জে বিএনপির সমাবেশে মুহুর্মুহু গুলি অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী আহত

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ হবিগঞ্জে বিএনপির সমাবেশ ও পদযাত্রায় গুলি চালিয়েছে পুলিশ। তাতে অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে দাবি করেছে বিএনপি।
শনিবার বিকেলে হবিগঞ্জ শহরের পৌরসভা রোড থেকে শায়েস্তানগর পয়েন্ট পর্যন্ত পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের এ সংঘর্ষ হয়।
জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক কাউছার আহমেদ জানান, বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে শায়েস্তানগরস্থ দলীয় কার্যালয়ে সমাবেশ করে। নেতাকর্মীরা তাতে বক্তব্য রাখেন। একটি পদযাত্রা শায়েস্তানগর পয়েন্ট থেকে দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশের সময় পুলিশ বিনা কারণে মুহুর্মুহু গুলি ছুড়তে থাকে। এতে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদেরকে বিভিন্নভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পুলিশের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সংঘর্ষের আগে দলীয় সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ জিকে গউছ বলেছেন, শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছে বিএনপি, আর গাড়িতে আগুন দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। বিএনপির আন্দোলন করে বাধাগ্রস্ত করতে তারা এমন ঘৃণ্য পথ বেছে নিয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি চায় বাংলাদেশের মানুষ ভোটকেন্দ্রে ফিরে আসুক। আমার ভোট আমি দিবো যাকে খুশি তাকে দিবো। বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতেই বিএনপি আন্দোলন করছে। ইনশাআল্লাহ বাংলাদশের গণতন্ত্র, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা না করে বিএনপি ঘরে ফিরে যাবে না।
হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো: মিজানুর রহমান চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্থফা রফিক, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাজী নুরুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী বেলাল, শায়েস্তাগঞ্জের মেয়র ফরিদ আহমেদ অলি, বিএনপি নেতা আজিজুর রহমান কাজল, নাজিম উদ্দিন শামছু প্রমুখ।
অপরদিকে, গতকাল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে কাঁচপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, পুলিশের লাঠিচার্জ, গাড়ি ভাঙচুর, ইটপাটকেল ও টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়েছে।
বিকেলে কাঁচপুর মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ৩০ জন আহত হয়।
জানা যায়, কয়েক দফা ওই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার কারণে ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রায় আধাঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরে অতিরিক্ত পুলিশ টিয়ার সেল ও কয়েক রাউন্ড ফাঁকা রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আধা ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষের পর পরই কাঁচপুর এলাকায় থম থমে অবস্থা বিরাজ করে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে পদযাত্রা কর্মসূচিতে শনিবার বিকেলে সোনারগাঁওয়ে কাঁচপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, সোনারগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আর্ন্তজাতিক-বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, নির্বাহী সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপুর নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা নিয়ে অবস্থান নেয়। এ সময় নেতাকর্মীরা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিল করে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ এসে নেতাকর্মীদের রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে তর্কের একপর্যায়ে পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ শুরু করলে নেতাকর্মীরা রাস্তা থেকে সরে যায়। প্রায় আধা ঘণ্টার এই ধাওয়া পাল্টার সময়ে পুলিশ টিয়ার সেল ও ফাঁকা রাবার বুলেট ছুড়ে। এতে বিএনপি নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে চলে যায়। পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ার সেল ও রাবার বুলেটে ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন জানান, আমাদের শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তার অবস্থান নিলে পুলিশ এসে অতর্কিত লাঠিচার্জ করেছে। পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর টিয়ার সেল ও গুলি ছুড়েছে। এতে আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাই মারমা জানান, অনুমতি ছাড়াই মহাসড়কের কাঁচপুরে জেলা বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচি করতে চেয়েছিল। আমরা তাদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরে যেতে বললে তারা আমাদের উদ্দেশে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। আত্মরক্ষার্থে আমরা কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেই। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। পরবর্তী বিশৃঙ্খলা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।