নদী ভাঙনের কবলে চন্দ্রপুরের প্রাচীন বাঁশের হাট

0

 

নজরুল ইসলাম মল্লিক, অভয়নগর (যশোর)॥ যশোরের অভয়নগর উপজেলার সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নে চন্দ্রপুর গ্রামের আতাই নদের চরে ৫২ বছরের প্রাচীন বাঁশের হাট। দিন যত গেছে ততই প্রসার বেড়েছে অর্ধ শতাব্দির হাটটির। সপ্তাহে প্রতি বুধবার সকাল থেকে শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত বেচাকেনা। কিন্তু সম্প্রতি নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে এ বাণিজ্য কেন্দ্র। হাটকে রক্ষা ও একটি স্থায়ী বিক্রয় কেন্দ্রের দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতা আসেন চন্দ্রপুরের বাঁশের হাটে। হাটে এসে তাদের চাহিদা অনুযায়ী বাঁশ কেনাবেচা করেন।ঐতিহ্যবাহী এই হাটটি ১৯৭১ সালে স্বল্প পরিসরে শুরু হয়।পরবর্তীতে দিনে দিনে হাটের পরিধি বাড়তে থাকে।বর্তমানে এই হাটটি এ অঞ্চলের বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নদীর তীরবর্তী ও প্রধান সড়কের সংলগ্ন হওয়ায় হাটটিতে পণ্য পরিবহন সহজ হয় বলে ক্রেতা ও বিক্রেতার অনেক সমাগম ঘটে। প্রতি হাটে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার বাঁশ বেচাকেনা হয়।বাঁশ দিয়ে ঘর তৈরি, পানের বরজ, খুঁটি,সবজি চাষের মাচা,নানা ধরণের আসবাব পত্র,বেড়াসহ বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি হয়।
নদীর পাড়ে প্রথম দিকে ২ একর জমির উপর হাটটি শুরু হলেও বর্তমানে নদী ভাঙনের ফলে ৫০ শতকের উপর হাটটি টিকে আছে। এখানে শুধু হাটবারে বাঁশ কেনাবেচা হয়।
যশোরের বসুন্দিয়া থেকে আসা ব্যবসায়ী মো. সাবু খান বলেন, যশোর ও খুলনার একটা বৃহত্তম বাঁশের হাট এটি। আমরা প্রতি হাটে অনেক টাকার কেনাবেচা করি। এই হাটে নিরাপত্তার ব্যবস্থা অনেক ভাল। তবে হাটটি নদী ভাঙনে কারনে আমাদের বাঁশ রাখতে অনেক কষ্ট হয়।
খুলনা থেকে আসা ব্যবসায়ী মকবুল শেখ বলেন,আমি প্রতি হাটে ৪০০ থেকে ৫০০ বাঁশ কিনে নিয়ে দিঘলীয়া,মধুপুর,হাজীগ্রাম নিয়ে বিক্রি করে থাকি। খুলনার পাইকগাছা থেকে আসা অন্য এক ব্যবসায়ী বলেন,এখান থেকে বাঁশ ক্রয় করে নৌকায় ভরে নিয়ে চালনা,মংলা,কালীনগর,চুতরখালী ইত্যাদি জায়গায় নিয়ে বিক্রি করেন।
চন্দ্রপুর বাঁশের হাট কমিটির সভাপতি মতিয়ার রহমান খান বলেন, ১৯৭১ সালে এই বাঁশের হাটটি শুরু হয়। এখানে অনেক দূরদূরান্ত থেকে ব্যাপারী আসে। এই হাটে হাজার হাজার বাঁশ বেচাকেনা হয়। বর্তমানে হাটটি নদী ভাঙনে বিলিন হতে চলেছে। সরকারের কাছে হাটটি মেরামতের সুব্যবস্থা ও ব্যাপারীদের থাকার জন্য একটি চান্দিনার দাবি জানান।
অভয়নগর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ ফরিদ জাহাঙ্গীর বলেন, এই বাঁশের হাটের মাধ্যমে অভয়নগরসহ আশেপাশের অনেক উপজেলার মানুষ ব্যাপক উপকৃত হয়। সময়ের ব্যবধানে ভাঙনে এই হাট নদী গর্ভে বিলিন প্রায়। এ অবস্থায় আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে আহবান জানাবো,গাইডওয়াল র্নিমানের মাধ্যমে হাটটিকে সংরক্ষণ করবার। এবং এর পাশাপাশি চান্দিনা তৈরি ও সার্বিক উন্নয়নের জন্য উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে যতটুকু করা সম্ভব তা আমি আন্তরিক ভাবে চেষ্টা করবো।