পবিত্র হজ আজ

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ ‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক। লাব্বাইক, লা শারিকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নাল হামদা, ওয়াননি’মাতা, লাকা ওয়ালমুলক, লা শারিকা লাক…।’ এমন মধুর ধ্বনি-প্রতিধ্বনিতে পবিত্র আরাফাতের পাহাড়ঘেরা ময়দান ছাপিয়ে আকাশ-বাতাস মুখর ও প্রকম্পিত হচ্ছে আজ।
পাপমুক্তি আর আত্মশুদ্ধির আকুল বাসনায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইসলামের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ এই পবিত্র হজ পালন করেন। আজ মঙ্গলবার ফজরের সালাতের পরেই মিনা থেকে দলে দলে হাজিগণ উপস্থিত হচ্ছেন আরাফার ময়দানে। সফেদ-শুভ্র দুই খ- কাপড়ের এহরাম পরিহিত হাজিরা সেখানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত থাকবেন। আরাফাত ময়দানের মসজিদে নামিরায় জোহরের নামাজের আগে খুতবা পাঠ করবেন মসজিদুল হারামের খতিব। খুতবা পাঠ শেষে জোহর ও আসরের ওয়াক্তের মাঝামাঝি সময়ে হাজিরা জামাতের সঙ্গে কছর নামাজ আদায় করবেন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহ তাআলার জিকির-আসকার ও ইবাদতে মশগুল থাকবেন। এরপর মুজদালিফার উদ্দেশে আরাফার ময়দান ত্যাগ করবেন এবং মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ এশার ওয়াক্তে একত্রে পড়বেন এবং সমস্ত রাত অবস্থান করবেন। মিনায় জামরাতে নিক্ষেপ করার জন্য ৭০টি কংকর এখান থেকে সংগ্রহ করবেন। মুজদালিফায় ফজরের নামাজ পড়ে মিনার উদ্দেশে রওনা হবেন। ১০ জিলহজ মিনায় পৌঁছার পর হাজিদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়।
সৌদিতে এবার হজ করবেন ২৫ লাখের বেশি মানুষ। সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই বছরই সবচেয়ে বেশি মানুষ হজ করবেন। রোরবার কাবাঘর তাওয়াফের মধ্যে দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। সৌদি গেজেট জানিয়েছে, যারা হজ পালন করবেন, তারা রোববার বিকেলে কাবাঘর প্রদক্ষিণ করেন।
সৌদি আরবের হজ ও উমরাহ সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, এবার রেকর্ড সংখ্যক মানুষ হজ পালন করবেন।
করোনাকালে সীমীতভাবে হজ হয়েছিল। ২০২০ ও ২০২১ সালে বাইরের দেশ থেকে কাউকে হজ করার অনুমতি দেয়া হয়নি। ২০২২ সালে কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল করা হয়। ১০ লাখ মানুষকে হজ পালনের অনুমতি দেয়া হয়। এবার হজ হচ্ছে একেবারে স্বাভাবিক সময়ের মতো। বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২২ হাজার ২২১ জন হজ পালন করতে গেছেন।
রোববার কাবাঘর তাওয়াফের পর তারা তাবুনগরী মিনায় পৌঁছচ্ছেন। গতকাল সোমবার সারাদিন এবং রাত তারা মিনাতেই কাটিয়েছেন ইবাদত-বন্দেগির মধ্যে দিয়ে। আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় তারা জিকির করেছেন, জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়েছেন।
হজের মূল আনুষ্ঠানিকতার জন্য আজ মঙ্গলবার সকালে তারা জড়ো হয়েছেন প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে বিদায় হজের স্মৃতিবিজড়িত আরাফাতের ময়দানে। সেলাইছাড়া সাদা এক কাপড়ে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সেখানে থাকবেন।
মুসলমানদের কাছে পবিত্র এই ভূমিতে যার যার মতো সুবিধাজনক জায়গা বেছে নিয়ে তারা ইবাদত করবেন; হজের খুতবা শুনবেন এবং জোহর ও আসরের নামাজ পড়বেন।
আরাফাত থেকে তারা মিনায় ফিরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুজদালিফায় মাগরিব ও এশার নামাজ পড়বেন।
আগামীকাল বুধবার সকালে মিনায় ফিরে তারা প্রতীকী শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়বেন। এরপর কোরবানি দিয়ে ইহরাম ত্যাগ করবেন এবং সবশেষে কাবা শরিফকে প্রদক্ষিণ করে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।