রাজগঞ্জে একদিনে ২০টি গরু-ছাগল কামড়ে দিল কুকুর

0

ওসমান গণি, রাজগঞ্জ (যশোর)॥ যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ অঞ্চলে বেওয়ারিশ কুকুরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। একদিনেই কামড়িয়েছে কমপক্ষে ২০টি গরু-ছাগলকে। এদিকে কুকুরে কামড়ানো গরু- ছাগল নিয়ে আতংকে রয়েছেন মালিকেরা। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঝাঁপা ইউনিয়নের হানুয়ার ও কোমলপুর গ্রামে। এ ঘটনায় গোটা এলাকায় ভীতি বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানান, গত ১২ জুন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজগঞ্জ বাজার, দোদাড়িয়া, খালিয়া হানুয়ার ও কোমলপুর গ্রামের বিভিন্নস্থানে বেশ কয়েকটি কুকুর রাস্তার পাশে ও ক্ষেতে ঘাস খাওয়ার জন্যে বেঁধে রাখা গরু ও ছাগল কামড়াতে শুরু করে। কুকুরগুলো গরু-ছাগলের পেটের চামড়া ছিঁড়ে ফেলে অল্প একটু মাংস খেয়ে সেটি ফেলে আবার আরেকটির ওপর আক্রমণ করে। বিষয়টি দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী বেওয়ারিশ এ কুকুরগুলোকে তাড়া করলে পাশের বিভিন্ন গ্রামে চলে যায়।
ক্ষেতে বেঁধে রাখা হানুয়ার গ্রামের টগর হোসেনের দুইটি গরু ও জামাল উদ্দিনের দুইটিসহ মোট চারটি গরুকে কুকুরে কামড় দেয়। এছাড়া রাস্তার পাশে থাকা মোজাম গাজীর দুইটি, আব্দুল হাইয়ের দুইটি, আব্দুর রহমানের একটি ছাগল ও আতিয়ার রহমানের একটি ছাগলকে কুকুরে কামড়িয়ে জখম করে। পাশাপাশি কোমলপুর গ্রামের নিরোদ কুমারের একটি ছাগল, সুশান্তর একটি ছাগল ও একই গ্রামের রুহুল আমিনের একটি ছাগল এবং কামাল হোসেনের একটিসহ সর্বমোট দশটি ছাগলকে কুকুর কামড়ে দেয়। এছাড়াও আরো অনেকের গরু-ছাগলকে কুকুরে কামড়িয়েছে বলে জানা যায়। সেই সাথে এ কুকুরগুলো স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদেরও তাড়া করছে। এদিকে কুকুরে কামড়ানো গরু ও ছাগল নিয়ে চরম আতংকে আছেন গরু-ছাগল পালনকারিসহ এলাকাবাসী।
হানুয়ার গ্রামের কৃষক বিল্পব হোসেন জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বেশ কিছু কুকুর দল বেঁধে এলাকার বিভিন্ন রাস্তাসহ গ্রামের মধ্যে ঢুকে পড়ছে। এরপর বাড়িতে বেঁধে রাখা গরু ও ছাগলকে কুকুরগুলো কামড়িয়ে পালিয় যায়। কুকুরে কামড়ানো গরু-ছাগল কিছুদিন পর জলাতংকে আক্রান্ত হয় এবং পাগল হয়ে যায়। তখনই গরু-ছাগলের মালিকরা বুঝতে পারেন যে তাদের গরু-ছাগলকে কুকুরে কামড়িয়েছে। এ অবস্থা দেখে স্থানীয়রা তাদের গরু-ছাগল ঘাস খাওয়ার জন্যে বিলে বা রাস্তার পাশে ছাড়তে সাহস পাচ্ছেন না। এমনকি ওসব বেওয়ারিশ কুকুরগুলোর ভয়ে এসকল এলাকার স্কুল, কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবকসহ সাধারণ মানুষও ভয় পাচ্ছেন রাস্তায় চলাচল করতে।
মণিরামপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পার্থ কুমার জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে আলোচনা করে সম্প্রতি বৃহত্তর এ উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ১৮টি ইউনিয়নের বিভিন্ন হাট-বাজারে অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কুকুরকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। এছাড়া কুকুরে কামড়ানো গরু-ছাগলকে সঙ্গে সঙ্গে ভ্যাকসিন দিলে ভাল হয়ে যায়।
এদিকে কুকুরে কামড়ানোর বিষয়টি অজানা থাকার কারণে গরু-ছাগলের জলাতংকে আক্রান্ত হয়। জলাতংকে আক্রান্ত ওই গরু-ছাগলগুলোর মালিকরা অনেকটা দেরিতে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের কাছে নিয়ে আসেন। তখন তাদের কিছুই করার থাকেনা বলে জানান উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের এ শীর্ষ কর্মকর্তা।