চৌগাছায় কুরবানিকে সামনে রেখে ব্যস্ত খামারিরা

0

এমএ রহিম, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছায় কুরবানি ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে গরু মোটাতাজা করছেন তারা। তবে ভারত থেকে গরু না আসলে এবার উপজেলার খামারিরা লাভবান হবেন বলে আশা করছেন তারা। ভালো দামের আশায় খামারিরা কুরবানির বাজার ধরার জন্যে নিবিড়ভাবে পশু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের অফিস প্রধান জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এবারের কুরবানির জন্যে ২ হাজার ৫৭৬টি বাণিজ্যিক খামারে গরু ও ছাগল পালন করা হচ্ছে। এ ছাড়াও পারিবারিকভাবে পশু পালন করে ৮ হাজার ৯৭৫টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি বলেন, গত বছর থেকে এ বছর উপজেলায় কুরবানির পশু পালন বেশি হয়েছে। যা এ উপজেলায় কুরবানির পশু ৫ হাজার ২৫২ টির চাহিদা মিটিয়ে ৩ হাজার ৭২৩টি উদ্বৃত্ত থাকবে। এসব পশু এলাকার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন বড়-বড় শহরের হাটবাজারে সরবরাহ করা হবে।
উপজেলার মশিউরনগর গ্রামের খামার মালিক আলাউদ্দীন আলা মাস্টার বলেন, ‘আমার খামারে ৩৬টি গরু এবার কুরবানিতে বিক্রি করার জন্যে প্রস্তুত করেছি। গরুর দাম ভালো থাকলেও গো-খাদ্য ও শ্রমিকের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে গরু পালনে অন্যবারের চেয়ে এ বছর খরচ অনেক বেশি হয়েছে। সরকারিভাবে ভারত থেকে গরু আনা বন্ধ করতে না পারলে দেশীয় খামারিদের ব্যাপক লোকসানে পড়তে হবে।’
স্থানীয় এক খামারি জানান, তিনি গরু মোটাতাজাকরণে ব্যাপক সফল। তার সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই এখন অন্য পেশা ছেড়ে গরু মোটাতাজাকরণ কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছেন। কোনোপ্রকার ক্ষতিকর ভিটামিন কিংবা স্টেরয়েড ছাড়াই লালন পালনকৃত এসব গরু ভালো দামে বিক্রিও হবে। তিনি খামার পরিচালনায় প্রতিদিন নিজের শ্রমের পাশাপাশি মাসিক বেতনের দুজন শ্রমিকও রেখেছেন।
খামার মালিক সাইদুল ইসলাম বলেন, আমার খামারে ২০টি গরু এবার কুরবানিতে বিক্রি করার জন্যে প্রস্তুত করেছি। এসব পশু লালন-পালনে কোনো প্রকার স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়নি। শুধুমাত্র বিচালি, খৈল, গমের ভুসি, সবুজ ঘাস প্রভৃতি খাওয়ানো হয়েছে। গরুর জন্য ১ বিঘা জমিতে তিনি চাষ করছেন নেপিয়ার ঘাস। গরুগুলো বিক্রি করে তিনি এবারের কুরবানিতে পাঁচ-ছয় লাখ টাকা লাভের টার্গেট করছেন। সিংহঝুলী গ্রামের ছাগল ও ভেড়া খামারি নাকিব খান বলেন, এ বছর ছাগল ও ভেড়া পালনে ব্যাপকভাবে ব্যয় বেড়েছে। তাই ছাগল ও ভেড়ার বাজার মূল্য একটু বেশি না হলে খামারিদের লোকসানে পড়তে হবে।
উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আনোয়ারুল করিম বলেন, আমরা গরু-ছাগল খামারিদেরকে দেশি খাবার খাইয়ে মোটাতাজাকরণে ট্রেনিং দিয়েছি। যাতে তারা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহার না করেন।