গাছ কাটতে বাধা দেয়ায় পিতাকে মারপিট

0

স্টাফ রিপোর্টার,মণিরামপুর(যশোর)॥ যশোরের মণিরামপুরে অক্ষরজ্ঞানহীন কৃষক পিতার কাছ থেকে দুই শতকের পরিবর্তে প্রতারণা করে ৩২ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে বড় ছেলে উজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে। শুধু জমি নিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি উজ্জল। ওই জমি থেকে কয়েকটি গাছ বিক্রির সময় বাধা দেয়ায় পিতাকে মারপিটের পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কাটার চেষ্টা করা হয়েছে। ফলে পাষন্ড ছেলের হাত থেকে রেহাই পেতে পিতা সোমবার (৮ মে) বিকেলে থানায় হাজির হয়ে ছেলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অবশ্য পুলিশ বিষয়টি আমলে নিয়ে অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে তদন্ত শুরু করেছে।
এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার হানুয়ার গ্রামের কৃষক জামাল মোড়লের চার ছেলের মধ্যে সবার বড় উজ্জল হোসেন। তিনি বিয়ের পর আলাদা হয়ে যান। স্ত্রী এবং ছোট তিন ছেলেকে নিয়ে পিতা জামাল মোড়ল অপরের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ এবং দিনমজুরের কাজ করে অভাব অনটনের মধ্যে সংসার চালিয়ে আসছেন।
পিতা জামাল মোড়ল জানান, মাঠের জমিতে স্যালো মেশিন স্থাপনের জন্যে কয়েকমাস আগে বড় ছেলে উজ্জল হোসেন তার কাছে দুই শতক জমি দাবি করেন।ফলে ছেলের সুখের আশায় জামাল মোড়ল গত জানুয়ারি মাসে মণিরামপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে দুই শতক জমি বড় ছেলের নামে রেজিস্ট্রি(টিপ সইয়ের মাধ্যমে) করে দেন।
জামাল মোড়ল অভিযোগ করেন, মাঠের ওই জমি থেকে বড় বড় বেশ কয়েকটি গাছ গোপনে বিক্রি করে দেন বড় ছেলে উজ্জল হোসেন। রবিবার দুপুরে ওই গাছ কাটার সময় খবর পেয়ে জামাল মোড়ল বাধা দেন। অভিযোগ রয়েছে, এ সময় বড় ছেলে উজ্জল হোসেন তার পিতাকে জানান, ৩২ শতক এ জমির মালিক তিনি নিজেই। তার দাবি ৩২ শতক জমি তার পিতা তার নামে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন। গাছ কাটার সময় বাধা দেয়ায় উজ্জল হোসেন তার পিতাকে বেধড়ক মারপিট করেন।
জামাল মোড়ল জানান, দুই শতকের পরিবর্তে ৩২ শতক প্রতারণা করে রেজিস্ট্রি করেই ক্ষ্যান্ত হননি বড় ছেলে। গোপনে গাছ কাটার সময় বাধা দেয়ায় মারপিটের পর ধারালো দা দিয়ে তার গলা কাটার জন্যে এগিয়ে আসলে পিতা সেখান থেকে দৌড়ে জীবন রক্ষা করেন।
জামালের স্ত্রী ফাহিমা খাতুন বলেন, বড় ছেলে দুই শতক জমির পরিবর্তে ৩২ শতক জমি নিজের নামে প্রতারণা করে রেজিস্ট্রি করে আমাদের রাস্তায় বসিয়েছে। এখন সে তার পিতাকে মারপিটের পর খুন করতে আসছে।
তিনি অভিশাপ দিয়ে বলেন, এমন কুলাঙ্গার সন্তান যেন কারো ঘরে না জন্মায়।
তবে পিতাকে মারপিট এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করে বড় ছেলে উজ্জল হোসেন জানান, পিতা সজ্ঞানে তার নামে ৩২ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন। মণিরামপুর থানার ওসি(তদন্ত) গাজী মাহাবুবুর রহমান জানান, অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। সত্যতা পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।