যশোরে ডায়রিয়ায় এক নারীর মৃত্যু স্যালাইন সংকট : বেড়েছে দাম

0

বিএম আসাদ ॥ যশোরে ডায়রিয়া পরিস্থিতির মধ্যে কলেরা স্যালাইনের (আইভি স্যালাইন) সংকট দেখা দিয়েছে। এ সংকটের সুযোগ নিয়ে বাজারে দেখা দিয়েছে স্যালাইনের কৃত্রিম সংকট। ফলে ৯০ টাকা মূল্যের আইভি স্যালাইন ৬০ টাকা বাড়িয়ে ১শ ৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
হাসপাতালের পরিসংখ্যানে জানা গেছে, যশোরে ডায়রিয়া পরিস্থিতি চলমান রয়েছে। গতকাল সকাল ৮টা হতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ২০ জন ডায়রিয়া রোগী যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ২৪ ঘন্টায় ভর্তি হয়েছেন ৩৫ জন। ৫টি বেডের বিপরীতে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৫৯ জন। এর ভেতর ফাতেমা বেগম (৬০) নামে একজন রোগী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গত ২৫ এপ্রিল তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, ২৯ এপ্রিল রাত ২টার তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত ফাতেমা বেগম যশোর শহরের শংকরপুর এলাকার ইউসুফ আলীর স্ত্রী। গত এক সপ্তাহে ২শ ৯৫ জন ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। এক মাসে ভর্তি হয়েছেন ৮শ ৪৫ জন রোগী। কতর্ব্যরত চিকিৎসক, সেবিকা ও কর্মচারীদের বেগ পেতে হচ্ছে। রোগীদের চিকিৎসায় দেখা দিয়েছে কলেরা (আইভি) স্যালাইনের সংকট। একজন রোগীর ৪/৫টি করে আইভি স্যালাইনের প্রয়োজন হলেও সব স্যালাইন দেয়া হচ্ছে না হাসপাতাল থেকে। এক একজন রোগীর জন্য দেয়া হচ্ছে একটি করে আইভি স্যালাইন। বাকী স্যালাইন বাজার থেকে রোগীদের কিনতে হচ্ছে। হাসপাতালে স্যালাইনের সংকট থাকার কারণে কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য এ কৌশল অবলম্বন করেছেন। শনিবার পর্যন্ত ১শ টি আইভি স্যালাইন মজুদ ছিল। এ হাসপাতাল ছাড়াও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের আওয়ায় সিভিল সার্জন অফিসে মজুদ রয়েছে ১ হাজার ৮শটির মতো। যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্যে বরাদ্দ রয়েছে। এদিকে সরকারি হাসপাতালে আইভি বা কলেরা স্যালাইনের সংকট দেখা দেয়ার কারণে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে বাজারে। ফার্মেসিগুলোতে এ স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে না। একটি কলেরা স্যালাইনের বাজার মূল্য ৯০ টাকা। কোথাও স্যালাইন পাওয়া গেলেও দাম আকাশছোঁয়া। ৯০ টাকার স্যালাইনে ৬০ টাকা বৃদ্ধি করে ১শ ৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এ নিয়ে ফার্মেসি মালিকরা বলছেন, বাজারে কলেরা (আইভি) স্যালাইন নেই। ওষুধ কোম্পানিগুলো স্যালাইনের সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। তাই এ সংকট। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফার্মেসি মালিকগণ বলেন, ওষুধ কোম্পানিগুলো যখন কোন ওষুষের মূল্য বাড়িয়ে দেয় তখন বাজারজাত বন্ধ করে দেয়। এটা একটা কৌশল।
এব্যাপারে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলেন, হাসপাতালের কলেরা স্যালাইনের সংকট আছে। যা মজুদ তাই কম দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়া হচ্ছে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে তিনি যোগাযোগ রাখছেন। দু’একদিনের মধ্যে প্রয়োজনমত স্যালাইন পাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।