বাঘারপাড়ার রায়পুরে ভিজিডির চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে ভিজিডির (ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট) তালিকা তৈরি ও বিতরণ নিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তালিকায় নাম থাকলেও পরিষদে গেলে চাল পাচ্ছেন না অনেক দুস্থ নারী। এমনকি অনেকে জানেন না তাদের নাম তালিকায় আছে। আবার অনলাইন আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়ারাও পাচ্ছেন ভিজিডির চাল। উপজেলায় পাঠানো মাস্টাররোলের তালিকা এবং ইউনিয়ন পরিষদে চাল/গম বিতরণের তালিকারও কোনো মিল নেই। মাস্টাররোলে চাল উত্তোলনকারী গ্রাহকের সইয়ের কলামে সবার সই প্রায় একই রকমের।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দুস্থ নারীদের উন্নয়নের আওতায় ২০২৩-২০২৪ চক্রে রায়পুর ইউনিয়নে ২৭১ জন নারী ভিজিডি কার্ডধারী রয়েছেন। তাদের প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল ইউপি থেকে উত্তোলন করার কথা। গত জানুয়ারি মাসে রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা ২৭১জন কার্ডধারীর নাম চূড়ান্ত করে তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেন।
অভিযোগকারী একাধিক নারীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইউএনও’র কার্যালয়ে পাঠানো তালিকার সবাই চাল পাচ্ছেন না। ইউপি চেয়ারম্যান গত জানুয়ারি মাস থেকে তালিকাভুক্ত ২৭১ টি কার্ডের বিপরীতে চাল বিতরণ করছেন। চূড়ান্ত তালিকাভুক্ত দেয়াড়া গ্রামের জুলেখা (ক্রমিক নম্বর ৪৮), দর্গাপুর গ্রামের ডলি খাতুন (ক্রমিক নম্বর ১২৫), আজমপুর গ্রামের পাখী খাতুন (ক্রমিক নম্বর ১৪২), ফিরোজা বেগম (ক্রমিক নম্বর ২৫৫), শালবরাট গ্রামের লিপি খাতুন (ক্রমিক নম্বর ২১৪), মনিরা খাতুন (ক্রমিক নম্বর ২৪০) ও পারুল খাতুন (ক্রমিক নম্বর ২৩৭), সেখেরবাথান গ্রামের লাইলি (ক্রমিক নম্বর ২৬৮)সহ অনেক নারীকে কোনো চাল দেয়া হয়নি।
এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের একটি সুত্রে থেকে জানা গেছে, চূড়ান্ত তালিকা ও মাস্টারোল মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেয়া হলেও অনেকেই চাল পাননি। আবার যাদের নাম চূড়ান্ত তালিকায় নেই তারা চাল উত্তোলন করেছেন।
একাধিক উপকারভোগী নারীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, এখনও পর্যন্ত ভিজিডি কার্ড তারা হাতে পাননি। অথচ চার মাস চাল বিতরণ করা হয়েছে।
একজন ইউপি সদস্য না প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মাস্টাররোলে উত্তোলনকারীর স্বাক্ষর জাল করে পরিষদের গ্রাম পুলিশ ও ইউপি সদস্যরা বিভিন্ন নাম দিয়ে চাল উত্তোলন করেছেন। এমনকি ধনি ব্যক্তির নামও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
অনিয়মের বিষয়ে রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুনজুর রশিদ স্বপন বলেন,‘দুটি নামের সমস্যা ছিলো। সেগুলো সংশোধন করা হয়েছে।
এ উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও প্রকল্পের তদারককারী কর্মকর্তা রাজ কুমার পাল বলেন,এটা ঘটে থাকলে অবশ্যই দন্ডনীয় অপরাধ। আমরা সামনের মাসে চাল বিতরণের সময় ইউপিতে উপস্থিত থাকবো। সেখানে অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান জানান, এ অনিয়মের বিষয়ে আমার কাছে একজন অভিযোগ দিয়েছিলেন। মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যানকে শোকজ করা হয়েছে। শোকজের উত্তর দেয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে একাধিক অনিয়ম হলে একটি তদন্ত টিম করা হবে।