মোংলা বন্দরের নাব্যতা বাড়াতে পশুর চ্যানেলে ড্রেজিং প্রকল্পের সময় বাড়ল

0

মনিরুল হায়দার ইকবাল, মোংলা (বাগেরহাট) ॥ মোংলা বন্দরে পশুর চ্যানেলের ইনারবার ড্রেজিং প্রকল্পের মেয়াদ আরও দু বছর বাড়ানো হয়েছে। সেই সাথে প্রকল্পের খরচও বেড়েছে ১৯৮ কোটি টাকা। এদিকে ইনারবার প্রকল্পের খনন কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হলে বন্দরের নাব্য সংকট নিরসন হবে। এর ফলে মোংলা বন্দরে পণ্য আমদানি-রফতানিতে গতি বাড়বে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে মোংলা বন্দরকে উজ্জীবিত করতে সাগরের মোহনা থেকে বন্দর জেটি পর্যন্ত প্রায় ১৩২ কিলোমিটার চ্যানেল ড্রেজিংয়ের জন্য দুটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে আউটারবার ড্রেজিংয়ের কাজ শেষ করে শুরু হয় ১৯ কিলোমিটার ইনারবার ড্রেজিংয়ের কাজ। বালু ফেলার জন্য ১৬০০ একর জমি সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়। তবে এরমধ্যে খুলনা জেলার বানীশান্তা ইউনিয়নে প্রায় ৩০০ একর জমিতে বালু ফেলা নিয়ে স্থানীয়দের বাধার মুখে এ কার্যক্রম অনেকটা মুখ থুবড়ে পড়ে। এর মধ্যে প্রকল্পের মেয়াদকালও শেষ হয়ে যায়। এ অবস্থায় বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধির জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায়। গত ৪ এপ্রিল একনেক সভায় এ প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।
বন্দর কর্তৃপক্ষের সিভিল বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ও ইনারবার ড্রেজিং প্রকল্প পরিচালক শেখ শওকত আলী বলেন, আমাদের ধারণা ছিল শুরু থেকে এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করতে সময় লাগবে মাত্র এক বছর। কিন্তু ২০২১ সালের ১৩ মার্চ শুরু হওয়া এ কাজটি ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হওয়ার কথা থাকলেও চলমান কাজের মধ্যে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় ড্রেজিংয়ে ধীর গতি নেমে আসে। পরে এ প্রকল্পের মেয়াদ দু বছর বৃদ্ধি করে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তিনি আরও জানান, প্রথম অবস্থায় ৭৯৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা প্রকল্পের ব্যয়ের টাকা ধরা হলেও এখন সময় বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যয়ের পরিমাণ আরও ১৯৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বাড়িয়ে ৯৯২ কোটি ২৭ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা ইতোমধ্যে একনেক সভায় অনুমোদন হয়েছে।
বর্তমানে প্রকল্পের শতকরা প্রায় ২৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন করা সম্ভব হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে শওকত আলী আরও বলেন, চ্যানেলের খনন সম্পন্ন হলে ৯ দশমিক ৫ মিটার থেকে ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ মোংলা বন্দর জেটিতে সরাসরি প্রবেশ করতে পারবে।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মো. আজিজুর রহমান বলেন, এক সময় নদীর নাব্য সংকটে অচল ছিল এ মোংলা বন্দর। বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় এ বন্দর বিশ্বের কাছে এখন একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।