কালীগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বার গর্ভপাত, আদালতে ধর্ষণ মামলা

0

 

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতা॥ কালীগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বা এক যুবতীর গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে দারুশ শেফা প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আদালতে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওই যুবতী। এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাতে মামলার প্রধান আসামি এএফ রাফাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মামলার অন্য দুই আসামি মিতু ইসলাম ও তার স্বামী সুমনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মামলার বিবরণে জানা গেছে, কালীগঞ্জ শহরের পাইকপাড়া এলাকার ২০ বছর বয়সী ওই যুবতীর সাথে নিমতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা শওকত আলীর ছেলে এএফ রাফা (২০) নামের এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্কের সূত্র ধরে রাফা ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নিমতলা বাসস্ট্যান্ডে নিজ বাসায় নিয়ে তার সাথে শারীরিক সম্পর্কে করেন। এতে করে ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর তিনি তার প্রেমিককে জানান এবং বিয়ের জন্য বললে প্রেমিক রাফা তাকে বিয়ে করে ঘরে তুলে নেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দেন। অপরদিকে রাফা যশোর কোতোয়ানী থানার লোহাপট্টির বাসিন্দা নিজ ভগ্নিপতি সুমন মিয়া এবং বোন মিতু ইসলামকে তার প্রেমিকের গর্ভপাত ঘটানোর পরামর্শ দেন। সেই অনুযায়ী রাফা তার প্রেমিকাকে নিয়ে কালিগঞ্জ বাজারে কালিবাড়ির সামনে অবস্থিত ডা. জহূরুল হক জহর পরিচালিত দারুশ সেফা হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে ডা. রেক্সোনা পারভীনের তত্ত্বাবধানে গর্ভপাত ঘটান। গর্ভপাত ঘটানো প্রক্রিয়া যথাযথভাবে না হওয়ায় ওই নারীর প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় এবং তিনি খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় ডা. রেক্সোনা পারভীন রোগীকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীর আলট্রাসনোগ্রাফি করতে বলেন। সরকারি হাসপাতাল থেকে পুনরায় ওই রোগীকে দারুশ শেফা হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে নিয়ে এসে ডা. রেক্সোসানা পারভীনকে দিয়েই করা হয় আলট্রাসনোগ্রাফি। সেই রিপোর্ট নিয়ে পুনরায় সরকারি হাসপাতালে গেলে সেখানকার ডাক্তার জানান, বাচ্চার কিছু অংশ পেটের ভেতরে আছে। প্রাইভেট ক্লিনিকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ব্যতীত গর্ভপাত ঘটানোর কোন নিয়ম-নীতি না থাকলেও দারুশ শেফা হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক রেক্সোনা পারভীন ওই নারীর অসম্পূর্ণভাবে গর্ভপাত ঘটিয়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীর জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেন । কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলমগীর হোসেন জানান, ‘এভাবে গর্ভপাত ঘটানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কেউ অভিযোগ দিলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে সিভিল সার্জন মহোদয়কে জানানো হবে।’কালীগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রহিম মোল্লা ধর্ষণ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এই মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করে আমরা আদালতে প্রেরণ করেছি। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।