নজরুল ইসলাম মল্লিক, অভয়নগর (যশোর)॥ যশোরের অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভগ্নদশার সৃষ্টি হয়েছে। শিল্প-বাণিজ্য ও বন্দর নগরী নওয়াপাড়ার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত এ হাসপাতালটিতে অভয়নগর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ যশোর সদরের কিছু গ্রাম, নড়াইল, মণিরামপুর ও খুলনার ফুলতলা উপজেলার একাংশের রোগীরা চিকিৎসা নিয়ে থাকে। ফলে চিকিৎসা কেন্দ্রটিকে সারা বছর রোগীর ব্যাপক চাপ সামাল দিতে হয়। যে কারণে প্রায় দেড় যুগ আগে ৩৫ শয্যার হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যায় উন্নিত করা হয়। যা দেড় যুগ ধরে কেবল কাগজ কলমেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। দিন গেলেই হাসপাতালটিতে কেবল রোগীর চাপই বাড়ছে। কিন্তু বাড়েনি সুযোগ-সুবিধা। এছাড়া অর্ধশত বছর আগে নির্মিত জরাজীর্ণ ভবনে চলছে হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম। প্রতিনিয়ত পলেস্তারা খসে পড়ছে রোগীদের বেডে। পলেস্তারা খসে পড়ে রোগী ও তাদের স্বজনরা আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা যেমন চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে তেমনি ডাক্তার ও সেবিকারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা চলমান রেখেছেন। ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ। তবুও চরম অবহেলিত এ হাসপাতালটির অবকাঠামোগত উন্নয়নের এবং ১শ’ শয্যায় উন্নীত করে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দাবি বরাবরই অগ্রাহ্য হচ্ছে।
যশোর জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস সুত্রে জানাগেছে, হাসপাতালের ভবনটির জরাজীর্ণ অবস্থার খবরে সম্প্রতি হাসপাতালটি পরিদর্শন করেন জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী। তিনি হাসপাতালটি পরিদর্শন করে উদ্বেগ প্রকাশ করে ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছেন। এবং যত দ্রুত সম্ভব রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তরের অনুরোধ করেছেন। অন্যথায় বড়ধরনের দূর্ঘটনা ঘটার শংকাও প্রকাশ করেছেন তিনি।
প্রকৌশল অফিস সূত্র আরও জানায়, অর্ধশত বছর আগে নির্মিত ভবনটির আয়ুষ্কাল ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। কমে গেছে রেইন ফোর্সমেন্টের স্ট্রেইনথ। ভবনটি এখন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। নিরাপদ স্থানে হাসপাতালটির কার্যক্রম স্থানান্তর জরুরী।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, আমি নিজেও রোগী ও চিকিৎসক-সেবিকাদের নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছি। এই মুহূূর্তে ভবনটি থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সরিয়ে নেয়ারও কোন ব্যবস্থা নেই। অচিরেই হাসপাতালটিকে একশ’ শয্যায় উন্নীত করে সে অনুযায়ী নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানান এ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। অন্যথায় জান মালের ক্ষতির আশংকাও করেন তিনি।