যমেক শিক্ষার্থী নির্যাতন:কোতয়ালি থানা মামলা রেকর্ড না করায়,আদালতে গেলেন ভুক্তভোগীর ভাই

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কোতয়ালি থানার পুলিশ মামলা নথিভুক্ত ( রেকর্ড) না করায় যশোর মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী জাকির হোসেনকে মারধর ও হত্যার চেষ্টার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাচের ৭ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার আদালতে মামলা করেছেন তার ভাই রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম। যশোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মঞ্জুরুল ইসলাম অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য কোতয়ালি থানা পুলিশের ওসিকে আদেশ দিয়েছেন।
বাদির আইনজীবী কাজী ফরিদুল ইসলাম জানান, কোতয়ালি থানার পুলিশ মামলা গ্রহণ না করায় জাকির হোসেনের ভাই জাহাঙ্গীর আলম আদালতে এই মামলা করেন। বিচারক এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে বিষয়টি আদালতকে অবহিত করার জন্য আদেশ দিয়েছেন কোতয়ালি থানার ওসিকে।
মামলার আসামিরা হলেন, যশোর মেডিকেল কলেজের ৪র্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী শামীম হোসেন, ৫ম ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান আকাশ, ৬ষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান লিয়ন, ৯ম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাকিব আহমেদ তনিম, সৌম্য সাহা, ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী তন্ময় সরকার ও ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাসেল। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার জাকির হোসেন দৈনিক লোকসমাজকে জানান, আসামিদের মধ্যে রাসেল মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
মামলায় বাদি জাহাঙ্গীর আলম উল্লেখ করেছেন, তার ছোটভাই জাকির হোসেন বিপ্লব যশোর মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের ১০৫ নম্বর কক্ষে থেকে লেখাপাড়া করে থাকেন। উল্লিখিত আসামিরা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে হোস্টেলে জাকির হোসেনের পাশের ১০৪ নম্বর কক্ষসহ অন্যান্য কক্ষে মাদকের আড্ডা বসিয়ে হইচই করতেন। তাদের এ ধরনের কার্যকলাপের কারণে লেখাপড়ায় অসুবিধা হওয়ায় জাকির হোসেন এর প্রতিবাদ করেন । এ কারণে আসামিরা জাকির হোসেনকে খুনজখমের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। গত ৩১ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে আসামিরা হোস্টেলের ১০২ নম্বর কক্ষে গাঁজা সেবন করে হইচই চিৎকার করতে থাকলে তাদের নিষেধ করেন জাকির হোসেন। এরপর রাত পৌনে ৯টার দিকে আসামি রাসেলের হুকুমে অন্য আসামিরা হকিস্টিক, লোহার পাইপ, লাঠি, গাছিদা ইত্যাদি নিয়ে ১০৫ নম্বর কক্ষে ঢুকে জাকির হোসেনের কাছে কাগজপত্র ও চাবিসহ তার সুজুকি জিক্সার মোটরসাইকেল দিতে বলেন। অস্বীকার করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে জাকির হোসেনকে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকেন। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হকিস্টিক ও লোহার পাইপ দিয়ে মারধর করলে জাকির হোসেন মারাত্মক জখম হন। এরই এক পর্যায়ে কাগজপত্র ও চাবিসহ জাকির হোসেনের মোটরসাইকেল নিয়ে যান আসামি শামীম হোসেন। পরে জাকির হোসেনের চিৎকারে হোস্টেলের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে তাকে খুনজখমের হুমকি দিয়ে চলে যান অভিযুক্তরা। এরপর হোস্টেলের শিক্ষার্থীরা জাকির হোসেনকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে জাকির হোসেন মৃত্যুর সাথে লড়ছেন এবং কাশির সাথে তার রক্ত বেরুচ্ছে।
বাদি জাহাঙ্গীর আলম ওই ঘটনার পরপরই তার ভাইকে নির্যাতনের ঘটনায় কোতয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ সেটি নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি।