মাদ্রাসায় না এসেও বেতনের টাকা ভাগবাটোয়ারায় সুপারকে কারণ দর্শানো নোটিশ

0

 

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর)॥যশোরের মণিরামপুরে হাজরাকাঠি আহম্মদীয়া দাখিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ী ক্বারি শিক্ষক শেখ আবদুল মালেক প্রায় ১০ বছর যাবত প্রতিষ্ঠানে না এসেও প্রতিমাসে বেতন উত্তোলন করে আসছেন। অভিযোগ রয়েছে ম্যানেজিং কমিটির যখন যিনি সভাপতি হন সুপারের মধ্যস্ততায় তাকে ম্যানেজ করে পুত্রবধুসহ বিভিন্ন ব্যক্তিদের দিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করানো হয়। আবার প্রতিমাসে গোপনে শিক্ষক হাজিরা খাতা ও বেতনশিট বাড়িতে নিয়ে আবদুল মালেককে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে সরকারি বেতনভাতা উত্তোলনের পর ভাগবাটোয়ারা করা হয়। এ ব্যাপারে লোকসমাজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাদ্রাসার সুপারকে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করে তিনদিনের মধ্যে জবাব চেয়েছেন।
মনিরামপুর উপজেলার হাজরাকাঠি আহম্মদীয়া দাখিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ী ক্বারি শিক্ষক শেখ আবদুল মালেক ১৯৮৬ সালে এমপিওভুক্ত(সরকারি বেতন-ভাতাপ্রাপ্ত ইনডেক্স নম্বর কেবি-০৭৬৬৬৬) হয়ে বর্তমান তিনি ১৪ গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। কিন্তু প্রায় ১০ বছর আগে ২০১২ সালের দিকে তিনি অসুস্থ হন। সেই থেকে তিনি মাদ্রাসায় আসা বিরত রয়েছেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে যখন যিনি সভাপতি হয় সুপার আবদুস সামাদের মধ্যস্ততায় তাকে ম্যানেজ করে বাড়ি থেকে হাজিরা ও বেতনশিটে আবদুল মালেকের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে সরকারি বেতন উত্তোলন করা হয়।
ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম জানান, আগের সভাপতি মিজানুর রহমান মিন্টুর সময়কালে শিক্ষক আবদুল মালেকের পরিবর্তে এলাকার নাসিমা খাতুন নামে একজনকে দিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করানো হতো। কিন্তু নাসিমার বিয়ে হয়ে যাবার পর সভাপতি হন তরিকুল ইসলাম। তরিকুল ইসলামের সময়কালে আবদুল মালেকের মেয়ে খাদিজা খাতুনকে দিয়ে পাঠদান করাতেন। খাদিজার বিয়ে হয়ে যাবার পর নেয়া হয় মালেকের পুত্রবধূ উম্মে আসমা লিজাকে। কিন্তু পুনরায় সভাপতি হয়ে রফিকুল ইসলামের সময়কালে লিজাকে বাদ দেয়া হয়। সাবেক দুই সভাপতি মিজানুর রহমান মিন্টু ও রফিকুল ইসলাম জানান, গতবছর জুন মাসে নতুন সভাপতি হন গোলাম মুক্তাদির মন্টু। সেই থেকে মন্টু আবারও আবদুল মালেকের পুত্রবধূ লিজাকে দিয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা করেন।
অভিযোগ রয়েছে এভাবেই দিনের পর দিন, বছরের পর বছর ক্বারিয়ানা শিক্ষক আবদুল মালেক প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকলেও তাকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে বেতন উত্তোলনের পর ভাগবাটোয়ারা করা হচ্ছে। তবে নিজের দোষ অস্বীকার করে সুপার আবদুস সামাদ জানান, ম্যানেজিং কমিটির নির্দেশনায় শিক্ষক আবদুল মালেককে সুযোগ দেয়া হচ্ছিলো। ম্যানেজিং কমিটির বর্মতান সভাপতি গোলাম মুক্তাদির মন্টু জানান, গত বৃহস্পতিবার থেকে ক্বারিয়ানা শিক্ষকের পুত্রবধূ উম্মে আসমা লিজাকে বাদ দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার জানান, বিষয়টি নজরে আসার পর মঙ্গলবার মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আবদুস সামাদকে শোকজ করে তিনদিনের ভেতর জবাব চাওয়া হয়েছে। সুপার আবদুস সামাদ জানান, তিনি শোকজের কথা শুনেছেন। তবে এখনও হাতে পাননি।