কনকনে শীতেও থেমে নেই শ্রমজীবী মানুষেরা

0

 

 

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ হাঁড় কাপানো শীতে গরম কাপড় না পরে ঘর থেকে বের হওয়া কষ্টসাধ্য। কিন্তু প্রচন্ড শীত নিন্মআয়ের মানুষকে ঘরে আটকে রাখতে পারেনি। দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির বাজারে সংসারের চাকা সচল রাখতে শীতকে উপেক্ষা করে বের হয়েছেন কাজের সন্ধানে। প্রচন্ড শীতে কাকডাকা ভোরে কাজের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন তারা। নতুন বছরের শুরু থেকে চৌগাছা উপজেলাতে বয়ে যাচ্ছে শৈতপ্রবাহ। ঘন কুয়াশার সাথে মৃদু বাতাস সেইসাথে প্রচন্ড শীত। অতি প্রয়োজন ছাড়া গত দুই দিন মানুষ ঘর থেকে বের হয়নি, সে কারণে চৌগাছা উপজেলা সদরে মানুষের আনাগোনা বহুগুণ কমে গেছে। যারাই বাজারে এসেছেন তারা প্রয়োজনীয় কাজ সেরে যত দ্রুত ফিরেছেন আপন ঠিকানায়। কিন্তু প্রচন্ড শীতে কর্মজীবী মানুষগুলো ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও থাকতে পারেন নি বাড়িতে।  শীতে থেমে থেমে কেঁপে উঠছেন তারপরও ভ্যান নিয়ে বাজারে এসেছেন বয়োবৃদ্ধ ভ্যানচালক আইনাল বিশ্বাস, ইসাহক আলী। তারা বলেন, প্রায় ৩৫/৪০ বছর ধরে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। দীর্ঘ সময়ে কোন টাকা সঞ্চয় করতে পারিনি। যা রোজগার হয় তাতেই চলে সংসার। গত দুইদিনে যে পরিমাণ শীত পড়ছে তাতে মনে হচ্ছে লেপ মুড়ি দিয়ে ঘরে শুয়ে থাকি। কিন্তু সেটি তো আর সম্ভব না। একদিন আয় না হলে খাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। গত দুই দিনে বাজারে সাধারণ মানুষের চলাফেরা কমে গেছে তাই ভাড়াও অনেক কম হচ্ছে। রাজমিস্ত্রির প্রধান নাজমুল ইসলাম, সহকারী আল আমিন, জাবেদ আলী বলেন, প্রচন্ড এই শীতে মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। অথচ আমরা কাজের সন্ধানে ভোরে বাজারে চলে এসেছি। শীতে হাত পা বরফ হয়ে যাচ্ছে। তারপরও কিছুই করার নেই। কাজ করলে পরিবার ভালো থাকবে আর না করতে পারলে অশান্তির শেষ নেই। তাই এ ধরনের নানা প্রতিকুলতা উপেক্ষা করে কাজে আসি। চা বিক্রেতা বাদশা মিয়া বলেন, শীতের কারণে আজ (বুধবার) সকাল থেকেই ক্রেতার বড়ই অভাব। সারা দিন বেচাকেনা করে ৫শ টাকা ক্যাশ হবে কিনা সন্দেহ। শীতে দাঁড়িয়ে থেকে আর ভালো লাগেনা মনে হচ্ছে দোকান বন্ধ করে বাড়িতে যাই। কিন্তু পরিবারের কথা মনে উঠলে শীতকে ভুলে যাচ্ছি। পাঁচনামনা, ইছাপুর মাঠে বোরো ক্ষেতে কাজ করতে আসা দিনমজুর একাধিক ব্যক্তি বলেন, এই শীতে পানি মনে হচ্ছে বরফ হয়ে গেছে। ঠান্ডা যে পরিমাণ পড়ছে তাতে সমস্যা খুব একটা হতো না, কিন্তু শীতের সাথে কুয়াশা ও বাতাসের কারণে শরীর পুরোটাই ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। তারপরও কষ্ট হলেও ঘরে বসে থাকলে তো আর সংসার চলবে না। আমরা গরীব মানুষ কাজ করলেই ভালো থাকি।