আংশিক বইয়ে উৎসব !

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শতভাগ নয়, আংশিক বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিয়েই যশোরে বই উৎসব হয়েছে। নতুন বছরের প্রথম দিন নতুন কিছু বই পেয়ে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা কিছুটা উচ্ছ্বসিত হলেও বাদবাকি বইগুলো কবে তারা হাতে পাবে সে শঙ্কাও ছিলো তাদের চোখেমুখে। তবে জেলা শিক্ষা বিভাগ বলছে, জানুয়ারির ১৫ তারিখের মধ্যে যশোরের সকল শিক্ষার্থীর হাতে শতভাগ বই পৌঁছে দেয়া হবে। শুধু যশোর নয়, বিভিন্ন জেলা উপজেলায় বই উৎসবে একই অবস্থায় হয়েছে।
যশোর জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, যশোরে এবছর মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য বইয়ের প্রয়োজন ছিল ২৭ লাখ ৪৫ হাজার ৩৭৬ টি। যার মধ্যে গতকাল ১০ লাখ ৩২ হাজার ৫৬৯টি বই বিতরণ করা হয়েছে। আর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৩ লাখ ৪৮ হাজার ১১০টি বইয়ের বিপরীতে বিতরণ করা হয়েছে ৮ লাখ ২৭ হাজার ৭৯৬ টি বই। বাদবাকি বই আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছে যাবে বলে জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে।
রবিবার সকালে যশোর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বই উৎসবের শুরু হয়। এখানে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করা হয়। এসময় সেখানে যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার একেএম গোলাম আযমসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। এরপর পরই জিলা স্কুলে বই বিতরণ করা হয়। এভাবেই পর্যায়ক্রমে জেলার সকল থানা এলাকার মাধ্যমিক ,প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মাদরাসায় বই বিতরণ করা হয়। তবে শিক্ষার্থীদের হাতে শতভাগ বই তুলে দিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সানজিদ মো. সামিন যশোর জিলা স্কুলের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে জানায় তারা ক্লাসের ৬ টি বিষয়ের মধ্যে ৩ টি বিষয়ে বই পেয়েছে। তবে মূল বাংলা, ইংরেজি ও অংকের বই এখনো বাকি রয়েছে। বাকি বই তিনটি বই আগামী পনেরো দিনের মধ্যে দেয়া হবে বলে শিক্ষকরা জানিয়েছেন। এই ক্ষুদে শিক্ষার্থীর অভিমত নতুন বছরের প্রথম দিন সবগুলো বই পেলে খুবই ভালো হতো।
একই অবস্থা ছিলো যশোর সরকারি শিক্ষাবোর্ড স্কুল এন্ড কলেজের ক্ষেত্রেও। ওই প্রতিষ্ঠানের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাঝে চারটি বই বিতরণ করা হলেও এখনো বাংলা, ইংরেজি ও অংকের বই দেয়া হয়নি। কথা হয় শিক্ষাবোর্ড স্কুলের ৭ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর পিতা রফিকুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মাঝে আংশিক বিতরণ করলেও এখনো মূল বইগুলো তারা হাতে পায়নি। এসব বই সহসা হাতে পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন এ অভিভাবক।
এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার একেএম গোলাম আযম জানান, বিগত ১০ বছর ধরে সরকার নতুন বছরের শুরুর দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে উৎসাহ দিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরও বছরের শুরুর দিন বই তুলে দেয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। ইতোমধ্যে যশোরে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৬৫ শতাংশ বই পৌঁছে গেছে বলে তিনি দাবি করেন। বাকি বই চলতি জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে এসে যাবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, শনিবার গভীর রাতেও কয়েক ট্রাক বই যশোরে ঢুকেছে। এসব বই উপজেলা পর্যায়ে গেলেও সময় স্বল্পতার কারণে তা বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। পর্যায়ক্রমে সব বই খুব দ্রুত হাতে পাওয়া যাবে বলে তিনি দাবি করেন। এদিকে বই উৎসবে যোগ দিয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী হতে এবং কোচিং বর্জনের আহবান জানান যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, নতুন বছরের শুরু থেকে শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসতে হবে। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের সিরিয়াস হওয়ার আহবান জানান তিনি।