অপরিকল্পিতভাবে বৈদ্যুতিক পিলার স্থাপনে বাগেরহাটে বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ ব্যাহত

0

 

বাগেরহাট সংবাদদাতা॥ বাগেরহাটে পল্লী বিদ্যুতের পিলার ও তারে ভাতছালা-মুনিগঞ্জ বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চিঠি চালাচালি চললেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বাঁধ সংস্কার কাজ। এদিকে বৃষ্টি মৌসুম শুরু হওয়ার আগে কাজ না হলে, আবারও বিগতদিনের মত ভোগান্তিতে পড়বেন এলাকার মানুষ। বেড়িবাঁধের কাজে সৃষ্টি হবে দীর্ঘসূত্রিতা। এসব বিষয় চিন্তা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বৈদ্যুতিক খুটি ও তার অপসারণ করে বাঁধ সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ভাতছালা-মুনিগঞ্জ বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ শুরু হওয়ার আগেই বাঁধের ওপর ও বাঁধের পাশে থাকা বেশকিছু খুঁটি ও বৈদ্যুতিক তার অপসারণের জন্যে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে চিঠি দেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাগেরহাটের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী কুমার স্বস্তিক। চিঠির উত্তরে বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম প্রকৌশলী পারভেজ আলম পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানান, খুঁটি উত্তোলন, পুনঃস্থাপন ও অন্যান্য মালামাল বাবদ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ৯ লাখ ৬৫ হাজার ২৯৫ টাকা প্রদান করতে হবে। পরে ৭ ডিসেম্বর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী কুমার স্বস্তিক আবারও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে চিঠি প্রদান করেন। ওই চিঠিতে বলা হয় বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার অপসারণ এবং প্রতিস্থাপনের জন্যে এই প্রকল্পে কোন টাকা বরাদ্দ নেই। এই খাতে টাকা বরাদ্দ চেয়ে চিঠি দেয়া হবে। বরাদ্দ পেলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অনুকূলে টাকা জমা দেয়া হবে। এছাড়া চিঠিতে আরও বলা হয়, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি অপরিকল্পিতভাবে বাঁধের ওপর খুঁটি স্থাপন করেছে। যার কারণে বাঁধ নির্মাণ কাজে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। মঙ্গলবার বাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নির্মাণাধীন বাঁধের বিভিন্ন জায়গায় বৈদ্যুতিক খুঁটি রয়েছে। সেই সাথে বেশকিছু বৈদ্যুতিক তার অনেক নিচু রয়েছে।  স্থানীয় চরগ্রামের আসলাম হোসেন বলেন, প্রায় ত্রিশ বছর ধরে আমাদের এই বেড়িবাঁধটি নষ্ট ছিল। যার কারণে জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করে আমাদের জীবন চলতো। বাঁধ নির্মাণ শুরু হওয়ায় আমরা খুব খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি নানা কারণে বার বার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হোক।  গোলাম রসুল নামের এক ব্যক্তি বলেন, বেড়িবাঁধের কারণে আমাদের গাছ, ঘর বাড়ি ও জমি নষ্ট করছি। তারপরও পল্লী বিদ্যুতের খুঁটির কারণে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত কাজ শেষ হোক। বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপমহাব্যবস্থাপক (সদর-কারিগরি) মোল্লা আবু জিহাদ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের চাহিদা অনুযায়ী বৈদ্যুতিক খুঁটি ও লাইন স্থানান্তরের জন্যে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডেকে ক্ষতিপূরণের জন্যে চিঠি দিয়েছি। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সমাধান হলে খুঁটি ও লাইন স্থানান্তর করা হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডে বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ বলেন, অপরিকল্পিতভাবে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন করায় বাঁধ সংস্কার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এজন্যে আমরা বারবার সমিতিকে চিঠি দিয়েছি। তারপরও তারা কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। যার কারণে সময়মত কাজ শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।