বিজয়ের ৫১তম দিবস আজ

0

মাসুদ রানা বাবু ॥ আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। বাংলাদেশ ভূখন্ডের হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখন্ডের নাম জানান দেয়ার দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বাংলাদেশ স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করতে শুরু করে। আজ সেই মহান বিজয় দিবসের ৫১তম দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিন আত্মসমর্পণের আগে-পরে পাক হানাদার বাহিনীর প্রধান দুশ্চিন্তায় ছিলেন নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে। তারা শঙ্কিত ছিলেন,নয় মাসের গণহত্যা,নারী ধর্ষণ, অগ্নিসংসযোগ ও লুটতরাজের কারণে ক্ষুব্ধ মুক্তিবাহিনী আর জনতা তাদের ওপর প্রতিশোধ নিতে পারে। এদিন দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসে পাকিস্তানি ইস্টার্ন কমান্ডের হেডকোয়ার্টারে মিত্রবাহিনীর মেজর জেনারেল জ্যাকব আর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর লে.জেনারেল এ এ কে নিয়াজির মধ্যে আত্মসমর্পণ চুক্তি নিয়ে যখন দর কষাকষি চলছে,তখন পাকিস্তানি বাহিনীর নিরাপত্তা ছিল আলোচনার একটি বড় বিষয়। ঢাকায় তখন পাকিস্তানি সৈন্য আর নানা রকম আধাসামরিক বাহিনীর লোকজন মিলিয়ে ৯৪ হাজর সদস্য আটকে পড়ে। লে.জেনারেল এ এ কে নিয়াজি রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহাওয়ার্দী উদ্যান) আত্মসমর্পণ না করে সেনানিবাসে তার সদর দপ্তরেই আত্মসমর্পণের ব্যাপারে চাপাচাপি করছিল। সেটা যে কেবল জনসমক্ষে এড়ানোর জন্যে নয়,এর পেছনে তাদের নিজেদের পিঠ বাঁচানোর চিন্তার বিষয়টি কাজ করছিল তা বোঝা যায়। লে.জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা আর নিয়াজিকে বহনকারী গাড়ি বহর লাখ লাখ জনতার ভিড় ঠেলে রেসকোর্স ময়দানের দিকে এগোচ্ছিল,তখন একাধিকবার তাদের গাড়ি বহর রুদ্ধ হয়ে যায় জনতার চাপে। ক্ষিপ্ত জনতা নিয়াজিকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। তারা বলছিল,‘নিয়াজিকে আমাদের হাতে দাও । ও খুনি। ও আমাদের লাখ লাখ লোক মেরেছে, আমরা ওর বিচার করবো’। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্টপ্রতি মো.আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন।
আরও বাণী দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। জাতীয় এবং স্থানীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হবে। দেশের সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এছাড় সকাল ১০ টায় তেজগাঁও জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করবেন। এদিকে যশোরেও যথাযোগ্য মর্যাদায় বিস্তারিত কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হবে। সকালে মনিহারস্থ বিজয় স্মৃতিস্তম্ভে জাতির সূর্য সন্তানদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হবে।