আজ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মহলের উদ্বেগ

0

 

মাসুদ রানা বাবু ॥ আজ ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ ঘটনায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। হত্যা, গুম, বিচার বর্হিঃভূত হত্যাকান্ড, দমন পীড়নে কিংবা রাজনৈতিক পেশীশক্তি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে চরম উদ্বেগজনক অবস্থায় নিয়ে গেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে রয়েছে গুম, খুন, বিচার বর্হিভূত, হত্যা যেমন থানা হেফাজতে হত্যা, নারী-শিশু-মানব পাচার, অপহরণ, ধর্ষণ, নির্যাতন, শিশু শ্রম। বাংলাদেশে উপরোক্ত বিষয়গুলো উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া ভিন্নমতের মানুষ দমন পীড়নও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধর দেশের প্রাধানসহ, এ নিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত তাদের প্রতিনিধিরা বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বারবার বিশ্ব গণমাধ্যমে শিরোনাম হচ্ছে। অতি সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসসহ ১৫টি কূটনৈতিক মিশন। ৬ ডিসেম্বর ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের ফেসবুকের ভেরিফায়েড পেজে যা ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় প্রকাশিত হয় । এসময় তারা বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন। বিবৃতি দেওয়া ১৫টি দেশের মধ্যে রয়েছে, ব্রিটিশ হাইকমিশন, অস্ট্রেলীয় হাইকমিশন, কানাডীয় হাইকমিশন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ডেলিগেশন, জাপান দূতাবাস, ফ্রান্স দূতাবাস, ডেনমার্ক দূতাবাস, জার্মান দূতাবাস, ইতালির দূতাবাস, নেদারল্যান্ডস দূতাবাস, নরওয়ে দূতাবাস, সুইডিশ দূতাবাস, সুইজারল্যান্ড দূতাবাস, স্পেন দূতাবাস ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। যৌথ বিবৃতিতে কূটনৈতিকরা বলেন, ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়ন উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের মৌলিক ভূমিকাকে তুলে ধরতে চাই। আমরা মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রে সংরক্ষিত স্বাধীনতা উদযাপন করি এবং ঘোষণাপত্রে বর্ণিত বিভিন্ন অঙ্গীকারের মধ্যে স্বাধীন মতপ্রকাশ, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও নির্বাচন বিষয়ে জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রের অঙ্গীকার রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরি। অর্থপূর্ণ,অংশগ্রহণ, সমতা, নিরাপত্তা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক মানবিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অনুসরণীয় মূল্যবোধ ও নীতি হিসেবে আমরা গণতান্ত্রিক শাসনকে সমর্থন ও উৎসাহিত করি। আমরা বাংলাদেশের বন্ধু ও অংশীদার হিসেবে এদেশের সাফল্যকে আরো উৎসাহিত করতে আগ্রহী এবং মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করছি। তাদের এমন বিবৃতিতেও কারও বুঝতে বাকি থাকে না বাংলাদেশে মানবাধিকার কতখানি লঙ্ঘন হয়েছে কিংবা কতখানি পূর্ণতা আছে।
দেশের বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে মানবাধিকার উন্নয়ন ও উদ্যোক্তা ফাউন্ডেশন যশোরের সভাপতি অ্যাড. রুহিন বালুজ বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিত অত্যন্ত উদ্বেকজনক। থাকলেও আইনের যথাযথ প্রয়োগ আইন কিংবা বাস্তবায়ন নেই। সাংবিধানিক বিধি বিধানের বিষয়টি কেবল সংবিধানে মধ্যে সীমাবদ্ধ আছে।
আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিচালক ও খুলনা বিভাগীয় ইনচার্জ মনোয়ার হোসেন জনি বলেন, দেশে যে পরিবেশ পরিস্থিতি বিরাজ করছে তাতে করে দেশের মানবাধিকার পূর্নতা নেই। গুম,খুন, ধর্ষণ, বিচার বর্হিভূত হত্যাকান্ড মানবাধিকার পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক অবস্থায় নিয়ে গেছে। আইনের শাসনের অভাব ও দলীয়করণের প্রভাব এই পরিস্থিতির জন্যে অনেকাংশে দায়ী। আবার স্থানীয় সরকারের ভুমিকারও যথেষ্ঠ অভাব রয়েছে। কেউ যেন অহেতুক মিথ্যা মামলায় হয়রানি না হয় সে জন্য অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে দায়ী ব্যাক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এমনটি মনে করেন তিনি।