মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ খুলনাবাসী

0

 

খুলনা ব্যুরো॥ দিন-রাত মশার অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করছে খুলনাবাসী। বাসা-বাড়িতে অনেকেই সারাদিন মশারি টাঙিয়ে রাখছেন। অফিস-আদালত থেকে শুরু করে অভিজাত এলাকায় বিভিন্ন উপায়ে মশা দমনের চেষ্টা চলছে। সাময়িক সময়ের জন্য কিছুটা রক্ষা পাওয়া গেলেও মশার কবল থেকে রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না। খুলনায় শীত আগমনের সঙ্গে বেড়েছে মশার উপদ্রব । মশারি, কয়েল ও ইলেকট্রিক ব্যাট ব্যবহার করেও এ পতঙ্গের কামড় থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারছেন না নগরীর বাসিন্দারা।
এদিকে, আগে থেকেই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছিল খুলনায়। মশার উপদ্রব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন আরও বাড়ছে নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে। একই সঙ্গে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা। মশাবাহিত অন্যান্য রোগব্যাধির ঝুঁকি বাড়ায় পরিস্থিতি এগিয়ে যাচ্ছে চরম পর্যায়ে। সংশ্লিষ্টরা খুলনাকে ডেঙ্গুর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে নির্দিষ্ট করছেন। ভুক্তভোগীরা বলছেন, কেসিসি থেকে ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধের ধোঁয়া দিয়ে গেলেও মশার উপদ্রব কমছে না। বরং ফগার মেশিনের ধোঁয়ার ধাক্কায় ড্রেনে থাকা মশাগুলোও ছড়িয়ে পড়ে। মশার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে তাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন নাগরিক নেতারা। কেসিসির দাবি, মশক নিধনের নিয়মিত ওষুধ প্রয়োগ চলছে। কোনো কার্যক্রম থেমে নেই। নগরীর বসুপাড়ার বাসিন্দা মো. ইয়াহিয়া বলেন, সাধারণ সময় মশা থাকে। শীত শুরু হতেই এর উপদ্রব বেড়েছে ব্যাপকহারে। দিনে-রাতে সমানতালে মশার অত্যাচার চলছে। বাসায় শিশু ও বয়স্কদের জন্য সারাদিন মশারি টাঙিয়ে রাখতে হচ্ছে। রাতে কয়েল, ইলেকট্রিক ব্যাট- কিছুই মানে না।নিরালা এলাকার বাসিন্দা নেয়ামুল বারি হুজাইফা বলেন, দিন দিন ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। খুলনা সিটি করপোরেশন এ ব্যাপারে নির্বিকার। খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ বাবুল হাওলাদার বলেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক সম্প্রতি মশা নিধনের ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন। খুলনার প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের উন্নয়ন সমন্বয় সভায় ডেঙ্গুর প্রতিরোধে মশা নিধনের বিষয়ে জোর সুপারিশও করেন। কিন্তু এ সংক্রান্ত কোনো কার্যক্রম আমাদের চোখে পড়ছে না। মাঠ পর্যায়েও এমন কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি, যা উদ্বেগজনক। খুলনার নাগরিক নেতা মিজানুর রহমান বাবু বলেন, মশার উৎপাত ভয়াবহ বেড়েছে। নগরীতে নিয়মিত মশা নিধনের ওষুধ ছিটানো হচ্ছে না। অথচ প্রতি বছর মশা মারার জন্য সিটি করপোরেশন কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। মাঝেমধ্যে নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হলেও তাতে মশা মরে না। বরং তাড়া খেয়ে মশা ঘরে ঢুকে যায়। অবিলম্বে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন তিনি। শত অভিযোগ থাকলেও খুলনা সিটি করপোরেশন তার ধার ধারে না। কেসিসির কনজারভেনসি কর্মকর্তা নূরুন্নাহার এ্যানি বলেন, নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডে একই মশক নিধনকর্মী ফগার মেশিনের মাধ্যমে নিয়মিত মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা চলছে। বর্তমানে মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় আরও ৩৬ কর্মীকে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।