প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত, ভারপ্রাপ্ত ছুটিতে

0

 

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছা পৌর সদরের  ছারা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়  অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। প্রধান শিক্ষক বরখস্ত আর সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রভাত কুমার মিশ্র ছূটিতে আছেন।ল্যাবসহকারীসহ বেশ কিছু পদও রয়েছে শূন্য। শুন্যের ছড়াছাড়িতে স্বাভাবিক পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পাঠদানের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি করেছেন অভিভাবকসহ উপজেলার সাধারণ মানুষ।
চৌগাছা পৌর সদরের পুরনো পৌর ভবনের পাশেই অবস্থিত চৌগাছা ছারা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। ১৯৬২ সালে কতিপয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব নারী শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৪শ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।
রোববার দুপুর ১টার সময় বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা যে যারমত বিদ্যালয়ের বারান্দা, খেলার মাঠ এমনকি পাশের দোকনে খাবার কিনতে আসা যাওয়া করছে। বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক কর্মচারী নিয়ে বর্তমান এ্যাডহক কমিটি সভাপতির উপস্থিতিতে সভা চলছে। এ সময় কথা হয় বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী কুমারী বাসন্তি দাস বর্ষা, সোনিয়া ইয়াসমিন প্রাপ্তি, ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিয়া ইয়াসমিন কথা, ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সেঁজুতি সরকারের সাথে। তারা বলেন, আগের মত আর ক্লাস হচ্ছেনা, প্রতি দিনই দু’একটি করে ক্লাস অফ যাচ্ছে। হেড স্যার নেই অভিযোগ করার জায়গাও নেই। অভিভাবক শাহিনুর রহমান, শারমিন আক্তার বলেন, হেড স্যারের চেয়ার খালি, ক্লাস হচ্ছে কি হচ্ছে না, আমাদের সন্তানরা স্কুলে নিয়মিত যাচ্ছে কি যাচ্ছে না এই খোঁজ নেয়ার মত কেউ নেই। বলা চলে অভিভাবকহীনভাবে চলছে বৃহৎ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
সর্বশেষ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পান গোলাম মোস্তফা। তিনি ২০১৯ সালের ১৭ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব নেয়ার পর বেশ ভালো ভাবেই চলতে থাকে শিক্ষা কার্যক্রম। কিন্তু চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল নানা অভিযোগ সেই সময়ের বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের (অ্যাডহক কমিটির) সভাপতি এসএম আতিয়ার রহমান প্রধান শিক্ষককে সাময়িক অব্যাহতি দেন। প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বিভিন্ন জায়গায় নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে সক্ষম হলে পুনরায় দায়িত্ব ফিরে পান। চলতে তাকে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। এরই মাঝে এ্যাডহক কমিটি পরিবর্তন হয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এসএম সাইফুর রহমান বাবুল। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর নানা জাল জালিয়াতির কারণে পুনরায় প্রধান শিক্ষককে গত মাসের ৮ তারিখে বরখাস্ত হন। এরপর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রভাত কুমার মিশ্রকে। তিনি কিছুদিন দায়িত্ব পালনের পর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ওই পদ থেকে চলতি মাসের ১২ তারিখে অব্যাহতি নেন। একদিকে সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ দীর্ঘদিন শূন্য অন্যদিকে প্রধান শিক্ষককে অনিয়মের কারণে করা হয়েছে বরখস্ত । ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব হতে সরে গেছেন, তাই অভিভাবকহীন ভাবেই চলছে এই বিদ্যালয়টি।

অ্যাডহক কমিটির সভাপতি এসএম সাইফুর রহমান বাবুল বলেন, বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক রেজুলেশন জাল জালিয়াতি করাসহ নানা অনিয়মে বহিষ্কার হয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অসুস্থতার কারণে ছুটিতে আছেন। বর্তমানে সহকারী শিক্ষক তছলিমুর রহমানকে মৌখিকভাবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি দ্রুতই কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম মো. রফিকুজ্জামান বলেন, শিক্ষকদের ছুটিসহ সব কিছুই দেখাশুনার দায়িত্ব হচ্ছে পরিচালনা কমিটির প্রধানের উপর। ক্লাস নিয়মিত না হওয়া দুঃখজনক। দ্রুতই বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ঘটনাটি দেখা হবে।