যশোরে শিশুদের করোনা ভ্যাকসিনের নিবন্ধন পেতে বিড়ম্বনায় অভিভাবক

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মঙ্গলবার থেকে যশোরে ৫ বছর থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের করোনা টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। তবে টিকাদান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনেই করোনা ভ্যাকসিনের নিবন্ধন পেতে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয় মানুষকে। ভুক্তভোগীরা জানান, সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়েও তারা ব্যর্থ হন। আর এ সুযোগে কম্পিউটার ব্যবসায়ীরা আবেদনকারী শিশুদের অভিভাবকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত মুনাফা লুফে নিচ্ছেন।
জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার থেকে যশোরের ৮ উপজেলা ও যশোর পৌর এলাকায় একযোগে ৫ বছর থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে করোনা টিকা দেয়া শুরু হয়। ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত প্রথম ডোজের এ টিকা প্রদান করা হবে। স্কুলের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সমাজের নানা শ্রেণির শিশুদেরও এ টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথম দিনেই যশোরে ২৪ হাজার শিশুর মধ্যে এ টিকা প্রদান করা হয়। আর দ্বিতীয় দিন গতকাল বুধবার টিকা দেয়া হয় ১৮ হাজার ৯১০ জনকে।
তবে শিশুদের করোনা টিকা দিতে গিয়ে নিবন্ধন পেতে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয় অভিভাবকদের। শিশুদের এ টিকা পেতে জন্মনিবন্ধন দিয়ে নিবন্ধন সনদ ব্যবহার করে সুরক্ষা ওয়েবপোর্টালে গিয়ে নিবন্ধন করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। আর এ সুযোগে যশোরের বিভিন্ন অনলাইন ব্যবসায়ের দোকানিরা ভুক্তভোগীদের কাছ অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেন।
শহরের শংকরপুর এলাকার চোপদারপাড়ার বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম বলেন, তার ১১ বছর বয়সী মেয়ের জন্য করোনা ভ্যাকসিনের নিবন্ধন পেতে মঙ্গলবার রাতে দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ফোনে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। সুরক্ষা অ্যাপের ওয়েবপোর্টালের সার্ভার ব্যস্ত দেখায়। বাধ্য হয়ে বুধবার সকালে শহরের সিভিল কোর্ট মোড়ের একটি কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর ৬০ টাকা দিয়ে সংগ্রহ করতে হয় নিবন্ধনপত্র। অথচ এর আগে নিবন্ধনের ফরম পেতে ১০ থেকে ২০ টাকা খরচ হয়েছে বলে তিনি জানান।
তরিকুল ইসলাম নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, অনলাইনে সুরক্ষা অ্যাপে শিশুদের জন্মনিবন্ধন সনদের নম্বর দিয়ে বারবার চেষ্টা করেও আবেদন সাকসেস না হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা বেশি টাকা নিচ্ছেন। আমার দুই শিশু কন্যার জন্য নিবন্ধন নিতে ১০০ টাকা দিতে হয়েছে কম্পিউটারের দোকানিকে। এ নিয়ে দোকানদারদের সাথে অনেকেরই কথা কাটাকাটি হচ্ছে বলে তিনি জানান।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, একটি নিবন্ধন আবেদন সাকসেস করতে তাদের এক থেকে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় চেষ্টা করতে হচ্ছে। এ কারণে অন্যান্য কাজ ফেলে এ কাজ করতে হচ্ছে। এর ফলেই অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে বলে তারা জানান।
শহরের সিভিল কোর্ট মোড়ে একজন অনলাইন ব্যবসায়ী বলেন, ৫ বছর থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের করোনা টিকার নিবন্ধন আবেদনের চাপ থাকার কারণে সার্ভার ব্যস্ত হয়ে পড়ায় সবার ভোগান্তি বাড়ে। তবে বিকেলের দিকে স্বাভাবিক হয়ে আসছে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে যশোর সিভিল সার্জন অফিসের করোনা বিষয়ক তথ্য প্রদানকারী ডা. নাসিম ফেরদৌস বলেন, শিশুদের করোনা টিকা প্রদানের ক্ষেত্রে অভিভাবকরা অনেকটা বেশি সিরিয়াস। এজন্য নিবন্ধনের জন্য সবাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণেই কিছু প্রবলেম দেখা দিলেও যত সময় যাবে ততই সহজ হয়ে যাবে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে নিবন্ধনের যোগ্য সকল শিশুরা যাতে করোনা টিকার আওতায় আসে সেজন্য সর্বস্তরের মানুষকে সচেতন হওয়ার আহবান জানানো হয়েছে।