নিখোঁজ রহিমা খাতুন : সন্তানদের মামলায় তদন্তে নতুন মোড়

0

খুলনা ব্যুরো॥ মাকে ফিরে পেতে নিজেদের সর্বোচ্চটা করে যাচ্ছেন ছয় সন্তান। নিখোঁজের প্রথম দিনই মামলা করেছেন তারা। আটক হয়েছেন পাঁচজন। এরপর অনেকদিন কেটে গেছে, মায়ের কোনো খোঁজ পাননি তারা। কিন্তু ঘটনায় নতুন মোড় নিয়েছে, যখন রহিমা খাতুনের বর্তমান স্বামী বেলাল হাওলাদারকে (৫৫) গ্রেফতার করা হয়। গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতার বেলাল হাওলাদার নগরীর আড়ংঘাটা থানার তেলীগাতী এলাকার বাসিন্দা।
গত রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর ফুলবাড়িগেট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, রহিমা খাতুনের (৫৫) বর্তমান স্বামী বেলাল হাওলাদার। আগের পক্ষে রহিমা খাতুনের এক ছেলে ও পাঁচ মেয়ে রয়েছে। তবে বর্তমান স্বামীর ঘরে কোনো সন্তান নেই। নিখোঁজের পর থেকেই রহিমা খাতুনকে উদ্ধারে পুলিশের গোয়েন্দা তৎপরতা চলছে। এর মধ্যে স্বামী বেলাল হাওলাদারের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল সোমবার সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ তাদেরও রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তাদের জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। তাদের কাছ থেকে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, রহিমা খাতুনের স্বামীর গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার রাতে রহিমা খাতুনের দ্বিতীয় স্বামী বেলাল হাওলাদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয় এবং পরে তার সন্তানদের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, মামলায় এখনো পর্যন্ত কোনো ক্লু উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। রহিমা খাতুনকে খুঁজে পাওয়া গেলে অপহরণের ঘটনা সম্পর্কে বলা সম্ভব হবে।
এর আগে এই মামলায় আরো পাঁচজন মহিউদ্দিন, পলাশ, জুয়েল, হেলাল শরীফ এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সহকারী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
ওসি নজরুল বলেন, পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও বিষয়টি তদন্ত করছে।
তিনি আরো বলেন, ‘২৭ আগস্ট রাত ১০টার পর যোগীপোল এলাকায় রহিমার মোবাইল ফোন চালু থাকলেও ট্র্যাক করার আগেই তা বন্ধ হয়ে যায়।’
রহিমা খাতুনের মেয়ে মরিয়ম হান্নান সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে বলেন যে তার মা গত ১৭ দিন ধরে নিখোঁজ। যদিও প্রশাসন দাবি করেছে যে তারা তাকে খুঁজে বের করার জন্য কাজ করছে। আমি ঘুমাতে যাই বা খেতে যাই, প্রতি মুহূর্তে মায়ের মুখ আমার মনে আসে। তিনি অবশ্যই আশা করছেন যে তার সন্তানরা তাকে শিগগিরই খুঁজে পাবে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট রাতে বাড়ির নিচতলায় পানি আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন রহিমা খাতুন। ওই রাতে তাকে খুঁজে না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা প্রথমে স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। পরে তারা অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করে। এ মামলায় পুলিশ এ পর্যন্ত ছয়জন গ্রেফতার করেছে।