মহম্মদপুরে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ১১ দোকান লুট, আটক ৭

0

 

মহম্মদপুর (মাগুরা) সংবাদদাতা॥ মাগুরার মহম্মদপুরে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় ১১টি দোকানে লুট হয়েছে। এ ঘটনায় ৭ ব্যক্তি আটক হয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে সামান্য ঘটনায় উপজেলার বিনোদপুর ও ঘুল্লিয়া গ্রামবাসীর মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বিনোদপুর বাজারে ঘুল্লিয়া গ্রামের ব্যবসায়ীদের দোকান বেছে বেছে লুট করা হয়েছে। বিনোদপুর গ্রামের সংঘবদ্ধ লোকেরা এই লুটতরাজ করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনার পর নানা আশঙ্কায় বুধবার সকাল থেকেই বিনোদপুর বাজারের অধিকাংশ দোকান বন্ধ ছিল। এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব সদস্যরাও টহল দিচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বিনোদপুর হাইস্কুল মাঠে গ্রীষ্মকালীন স্কুল ও মাদ্রাসা ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ গ্রহণ করে রাড়িখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ঘুল্লিয়া দাখিল মাদ্রাসা। টাইব্রেকারে ঘুল্লিয়া দাখিল মাদ্রাসা পরাজিত হয়। এরপর ঘুল্লিয়া দাখিল মাদ্রাসা একাদশের খেলোয়াড়রা প্রতিপক্ষ রাড়িখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় একাদশের খেলোয়াড়দের ওপর চড়াও হয়ে মারধর করে। পরে এ বিষয়টি নিয়ে ঘুল্লিয়া ও বিনোদপুর গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘাতের রূপ নেয়। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিষয়টি সমাধানের জন্য মঙ্গলবার রাতে থানায় ডাকা হয় উভয়পক্ষকে। আর কোনো বিশৃঙ্খলা বা অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দেবেন না মর্মে দুইপক্ষই অঙ্গীকার করে। এরপর থানা থেকে বেরিয়ে বাড়িতে যাবার পথে যশপুর পৌঁছুলে ঘুল্লিয়া গ্রামের লোকজন বিনোদপুর গ্রামের রাজিব (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে আহত করে। তাকে প্রথমে মাগুরা পরে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। রাজিব বিনোদপুর গ্রামের ওয়াজেদ আলী বিশ^াসের ছেলে।
মঙ্গলবার রাতে রাজিবের ওপর হামলার পর ফুঁসে ওঠেন বিনোদপুর গ্রামের মানুষ। এদিন মধ্যরাতে বিনোদপুর বাজারে ঘুল্লিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী এমন ১১টি দোকান লুট হয়। এরমধ্যে অনিমেষের কাপড়ের দোকান, মিন্টুর কসমেটিকের দোকান, সাজ্জাদের স্যান্ডেলের দোকান, বক্কার শিকদারের ভূষির দোকান, ইলিয়াসের পার্টসের দোকান, হাসানের মুদি দোকান, মাববুব আলমের সার-কীটনাশকের দোকান, শাহজাহান শিকদারের হার্ডওয়ারের দোকান, বকুল মোল্যার স্যান্ডেলের দোকান, সেলিম জাবেদের ডেকোরেটরের দোকান এবং ইলিয়াসের মুদি দোকানের মালপত্র-পণ্য ও নগদ অর্থ লুট করে নিয়ে যায়।
বুধবার দুপুরে সরেজমিনে বিনোদপুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বিনোদপুর বাজার ও বিনোদপুর চৌরাস্তা বাজারের ৯৯ শতাংশ দোকানই বন্ধ। মহম্মদপুর ও মাগুরার থানা পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে গোটা বাজারে।
এ বিষয়ে মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ অসিত কুমার রায় বলেন, ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলার বিষয়টি শুধুমাত্র ইস্যু। মূলত: দুই গ্রামবাসীর মধ্যেকার পূর্ববিরোধের জেরে এসব অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটানো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।