আজ বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

0

 

মাসুদ রানা বাবু ॥ লাখো শহীদের রক্তে রাঙানো পবিত্র এই দেশে, ফুটবে নতুন আশার আলো সোনালী ধানের শীষে।
আজ ১ সেপ্টেম্বর! গণতন্ত্রের পতাকা শোভিত, স্বাধীনতা, সার্বভেীমত্ব রক্ষার প্রতীক এশিয়ার সর্ববৃগহৎ রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ বার্ষিকী উপলক্ষে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলীয় নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। মহান স্বাধীনতার ঘোষক, সাবেক রাষ্ট্রপতি বীর উত্তম শহীদ জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের এই দিন মাত্র ১৮ জনকে এক মোহনায় যুক্ত করার মধ্য দিয়ে দলটি গঠন করেন । এরপর তার নীতি আদর্শ দর্শনে গভীর আস্থাশীল এবং বাংলদেশী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী হয়ে আজ যুক্ত আছেন লাখো কোটি নেতাকর্মী । যখন দলটি প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করছে কার্যত তখনও দেশে গণতন্ত্রের নামে চলছে একদলীয় শাসন। অথচ এই দলের হাত ধরে স্বৈরশাসকের পতনের মধ্য দিয়ে গণতান্তিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একদলীয় শাসকদের প্রহসনের বিচারে দলীয় প্রধান সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বন্দি জীবন যাপন করছেন। গুরুতর অসুস্থ হওয়ার পর থেকে তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও শাসকদলের ঘৃণ্য রাজনীতির শিকার হয়ে বিদেশের মাটিতে নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন। গুমের শিকার দলটির জনপ্রিয় নেতা চৌধুরী আলম, এম ইলিয়াস আলীর মত অসংখ্য নেতা কর্মীর স্বজনরা আজ তাদের পথপানে চেয়ে আছেন। দীর্ঘ এক যুগের অধিক সময় ধরে চলা এক দলীয় শাসকদের সীমাহীন নির্যাতন, নিষপেশনের যাঁতাকলের পিষ্ট দলটির তৃনমূল থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। বর্তমান দলটির ৩৫ লাখ নেতাকর্মী মিথ্যা মামলায় জর্জরিত। শত শত নেতাকর্মী গুম হত্যার শিকার । হাজার হাজার নেতাকর্মী একদলীয় শাসকদের দলীয় সন্ত্রাসী এবং তাদের অনুগত প্রশাসনের নির্মম নির্যাতনে পঙ্গুত্ব জীবন যাপন করছেন।
১৯৭৮ সালের এই দিনে তৎকালীন ঢাকার রমনা রেস্টুরেন্টে বিকাল ৫টায় স্বাধীনতার মহান ঘোষকের এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র পাঠের মাধ্যমে দলটির যাত্রা শুরু হয়। সংবাদ সম্মেলনে তিনি দলটির আহ্বায়ক কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে ১৮ জন সদস্যের নাম ঘোষনা দেন। ১৯ সেপ্টেম্বর ওই ১৮ জনসহ ৭৬ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনা করা হয়। সেই ৭৬ জন থেকে আজ এই দলের মোহনায় যুক্ত লাখো কোটি নেতাকর্মীর পাশাপাশি কোটি কোটি ভক্তকূল। সময়ে দেশ ও জাতির ঐতিহাসিক প্রয়োজনে তিনি বিএনপি নামক এই নতুন দল গঠন করেন। যার মাধ্যমে দেশে কেবল মাত্র নতুন একটি দলের আতœপ্রকাশ ঘটেনি, প্রতিষ্ঠিত হয় বহদলীয় গণতন্ত্র। যে কারণে তাকে বহু দলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা বলা হয়। শুরু হয় দেশে উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতি। দলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ভিত্তিক ইস্পাত কঠিন গণঐক্যের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভেীমত্ব, নিরাপত্তা, রাষ্ট্রীয় অখন্ডতা ও গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত এবং সুসংহত করা। উন্নয়নের রাজনীতি, মুক্তবাজার অর্থনীতি, এবং গণতন্ত্রের মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়বিচার ভিত্তিক মানবমূখী অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জাতীয় সমৃদ্ধি অর্জন করা। বহুদলীয় রাজনীতির ভিত্তিতে জনগণের প্রত্যক্ষ নির্বাচিত একটি সংসদীয় পদ্ধতির সরকারের মাধ্যমে স্থিতিশীল গণতন্ত্র কায়েম করা এবং সুষম জাতীয় উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি করা। গণতান্ত্রিক জীবন ধারা ও গণতান্ত্রিক বিধি ব্যবস্থার রক্ষাকবচ হিসেবে গণনির্বাচিত জাতীয় সংসদের ভিত্তি দৃঢ়ভাবে স্থাপন করা এবং জনগণের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করা। বাস্তবধর্মী কার্যকর উন্নয়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জাতীয় জীবনে ন্যায়বিচার ভিত্তিক সুষম অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করা। যাতে সকল বাংলাদেশী নাগরিক অন্ন বস্ত্র বাসস্থান,শিক্ষা ও মানবিক চাহিদা পূরণের সুযোগ পায়। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বসী, ধর্মীয় মূল্যেবোধের ধারক ও বাহক, দেশপ্রেমে উজ্জীবিত, সৎ ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ধারনায় অনুপ্রাণিত ছিলেন। সেটি আজও তার অনুসারীদের ধমনীতে বিরাজমান। রাজনীতিতে একজন ত্রাণকর্তা হিসেবে শহীদ জিয়াউর রহমানে আবির্ভাব ঘটার পর তিনি প্রথমে আওয়ামীলীগের বাকশাল হটিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেন। বাংলার কৃষক শ্রমিক মেহনতি জনতার দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সবচেয়ে বেশি বার জনতার রায়ে রাষ্ট্র পরিচালানার মাধ্যমে ফুটিয়েছে অজ¯্র সোনালী আশার আলো। স্বধীনতার এই মহানায়ক হত্যার পর দলের বর্তমান চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এক যুগসন্ধিক্ষণে দলের দায়িত্ব নিয়ে অনেক ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছেন। যা এখন অব্যাহত আছে। প্রথমে তিনি স্বৈরাচার এরশাদ কে হটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করেন। তখন থেকেই তিনি আপোষহীন নেত্রী উপাধি পান। আজও তিনি আপোষহীন। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি জনগণের রায়ে তিনতিন বার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব লাভ করে। ফখরুদ্দীন, মইন উদ্দীনের সেই অনির্বাচিত সরাকারের শাসন আমলে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার গভীর ষড়যন্ত্র করা হয়। সেটি আজও অব্যাহত রেখেছে বর্তমান একদলীয় শাসক গোষ্ঠী। শাসক দলের সীমাহীন নির্যাতনের মধ্য দিয়েও দলটির নেতাকর্মীরা দেশব্যাপী উৎসব মূখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে দলের ৪৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করছে।